অনন্য উপহার


তখন একমাত্র পুত্রই সব ধ্যানজ্ঞান
স্বামী,কন্যা আর সবাই নেহাৎই ফেলনা ।
পুত্রকে ডাক্তার ইঞ্জিনীয়ার নয়তো বড় অফিসার
করতে হবে ,
সব চাইতে ভালো স্কুল ,কলেজ,এবং শিক্ষক চাই ।
উদায়স্ত খেটে স্বামীর নাভিশ্বাস তবু ও চলে না ।


রমা টিউশনী ধরে, রান্নার মাসী ছাঁটাই
ছেলের শিক্ষায় যেন না হয় কোন খামতী ।
অবহেলা আর অফুরন্ত পরিশ্রম শেষে
একদিন স্বামী সংসার ছেড়ে চির বিদায় নেয় হঠাৎ ।
ততদিনে ছেলে স্বয়ংম্ভর,ভাল চাকরী ভাল বিয়ে
সংসার ফুরফুরে প্রজাপতির মতো রঙীন ।


বছর না ঘুরতেই বৌমার আসল চেহারা একটু একটু করে ফোঁটে,
এখন ছেলের আর সময় হয় না মাকে দেখবার ,
সে এখন ব্যস্ত তার বৌ ,মেয়ে ,কর্মজীবন
ঘর দোর সাজানো,অতিথি আপ্যায়ন বৌয়ের সেবা ।
রমার নাওয়া খাওয়ার ঠিক নেই ,অসুস্হ শরীর ।
বৌ ঠিকমতো খেতে দেয় না তার খবর কে নেবে ?
ছেলের মেজাজ চড়া, বৌয়ের কথায় ওঠে বসে
রমাকে ধমকায় ,বলে যদি না পোষায়
যাও মেয়ের কাছে বা অন্য কোনখানে ।
এখানে থাকতে হলে আমাদের ইচ্ছের সঙ্গে
নিজেকে মেলাতে হবে ।
আমরা যেমন দেব তাতেই সন্তুষ্ট হবে
চলবে না আবদার ।
এই ছেলের জন্য স্বামীকে অবহেলা করেছে
দিন রাত্রি বছরের পর বছর
মেয়েরা রাগ করেছে হয়ে গেছে পর ।
এখন রমার আর অন্য কোন গতি নেই
পড়ে পড়ে খেতে হবে মার
ছেলেকে মানুষ করার অনন্য উপহার ।