বৃষ্টির টুপটাপ ফোটাফোটা পানি
যখন আমার দুচোখের কোণে,
আধো আধো সেই মিষ্টি স্মৃতিগুলো
তখনই চট করে পড়ে যায় মনে।
সেই বৃষ্টিস্নাত দিনে আমি আর নুসরাত মিলে
ছাতা ধরার সেই অপূর্ব সব মুহূর্ত,
আজ ঢেকে গেছে ধূলিঝড়ে
মুছে গিয়েছে সেই অকৃত্রিম বন্ধুত্ব।
রোম্যান্সের সব চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছিল
আমি আর তার হাত ধরে
অ্যাকশনগুলি ছিল দারুণ তাৎক্ষণিক,
যখন নুসরাতের দৃষ্টিতে আমার নজর যায় পড়ে।
ছলাত ছলাত বৃষ্টির কণাগুলিতে পিছলা শহর
আমরা দিতাম হেটে হেটে পাড়ি
আস্তে আস্তে এসে যেতাম গন্তব্যে
এবার তো যেতে হবে নিজেদের বাড়ি।
সম্ভব হতো না কখনো
নুসরাতকে নিয়ে গিয়ে নিজেদের ছাদে,
বৃষ্টিতে ভিজে দোলন খেতে খেতে দোলনায়
গল্প করে যেতে সারাটা বিকেল অবাধে।
কারণ রক্ষণশীলতার এক অদ্ভুত ছায়ামুখোশ
পরতে হতো আমাকে নিজের আঙিনায়,
বাড়ির বাইরের সেই মুক্তমনা ছেলেটি
তাই বৃষ্টি দেখত একাকী বারান্দায়।
সেসময় অবশ্য চ্যাটিং চলত চরম
বৃষ্টির দিনেও বন্ধুত্বটা ছিল যথেষ্ট উষ্ণ,
কথা বলতে বলতে অনলাইনে
হয়ে উঠেছিলাম রাতারাতি আমি বেশ সহিষ্ণু।
সহ্য করতাম সেই পাগলাটে সুন্দরী মেয়েকে
তার গালভরা মজার মজার সব কথা,
আজ যখন ভাবি সেই ছাদে উঠে
হৃদয়ের মধ্যখানে লাগে চিনচিনে ব্যথা।
সীমার মাঝে বেশিদূর আগায়নি এ সম্পর্ক
তাই রোমান্টিকতার সব উন্মাদনা ধুয়ে,
ধীরেধীরে বদলে গিয়ে আমাদের যত বোঝাপড়া
কনজার্ভিটির চাদর লাগল সেটির গায়ে।
যোগ্যতা আর স্ট্যাটাস এর বিচারে
সেই বৃষ্টিভেজা কিছু সন্ধ্যাবিকেলের স্মৃতি নয় যথেষ্ট,
চাইতে গেলাম তাই নিজের অধিকার মেয়েটির কাছে
সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুত্বের সব পাতা হল বিনষ্ট।
নুসরাত চেয়েছিল মুহূর্তের সঙ্গী
টাটকা সময় কাটানোর মত কাউকে,
বৃষ্টিস্নাত সুখময় দিনগুলির আবির্ভাব হঠাৎ করে
তাই বিষাক্ত করে দিল আমার জীবনটাকে।
বৃষ্টি আর রোমান্স তাই মৌসুমী ঋতুর মতো
এসেছিল সেই ছলনাময়ীর হাত ধরে
জীবন নৌকা আজ চলছে আবার স্রোত বিমুখে,
অনেকটা একলা একাকী হয়ে যেমন
ঘড়ির কাটাগুলি অবিরত ঘুরে।