আমার কাছে শ্রেষ্ঠতম বাঁচার অনুপ্রেরণা
রবীন্দ্রনাথের 'অপরিচিতা'র-
সেই গানের ধুয়া- "জায়গা আছে"।
তোমার গলার স্বর আমি ভুলিয়া গেছি-
আমায় ক্ষমা করো
অবশ্য কোনোকালেই আমি তোমার
কিছু ছিলাম কি না সেই প্রশ্ন থেকেই যায়;
আমার হাড় বের হওয়া শুকনো মুখে শত-সহস্র বার
দয়া করে তুমি তাকিয়েছিলে -
সেই দাবি থেকে আমি তোমাকে বলছি,
এক পৃথিবীর অবশিষ্ট দূরত্ব পাড়ি দিতে
আমার এক কলি গানের ধুয়া প্রয়োজন-
অনুপমের মতো এইটুকু দুরত্ব আমি
অবলীলাক্রমে পাড়ি দিতে পারি
আমার স্বপ্নের সাদা-কালো পৃথিবী ছেড়ে
এই চিরসবুজ-কুৎসিত পৃথিবীকে
ভালোবাসতে পারি


এই যে আমার ডানে-বামে,সামনে-পেছনে
কংক্রিটের দেয়াল;নিরস-নিষ্ঠুর
বেপরোয়া হর্ণ;কর্কশ-উদ্দেশ্যহীন
শূন্যলোক; দুঃস্বপ্নের মতো কালো
অন্ধকার; এমন বিদঘুটে কালো যে
ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন ছাড়া কিছুই দেখা যায় না
আর মানুষ; বড়ই স্বার্থপর-নির্বোধ
তারা তাদের গন্তব্য জানে না
তাদের দৃষ্টি ধনুকের মতো সরলরেখায়
বিরামহীন ছুটছে তো ছুটছেই-
দশদিকে থাকানোর অবকাশ নেই,
এক পাশে ভগ্ন হৃদয় নিয়ে
একটা মানুষ বসে আছে,
যার কখনো প্রেম কিংবা বিচ্ছেদ কিছু হয়নি
তবুও সে ভীষনভাবে পুড়ছে,
এক পৃথিবী ভালোবাসা একটি কচুরিপানার
ফুল সমেত;
তার একমাত্র কাঙ্ক্ষিত শ্যাম বর্ণের
শুচিস্মিতা-সুদর্শনা-সুকেশীনি'র
যুগল হাতে এগিয়ে না পাওয়ার দুঃখে।


গতরাত্রে তুমি আমার স্বপ্নে এসে
ভালোবেসে যত্ন করে অমনভাবে
হাত বাড়ালে;
আমাদের মধ্যকার সেই অঘোষিত
চির-বিধ্বংসী আড়ি ভুলে গিয়ে
আমি তোমার দিকে অগ্রসর হয়ে
আমার ডান পা সামনে বাড়ালাম-
হায়, একি!
তেত্রিশ গজ দুরত্ব পর্যন্ত পৃথিবী
দুই ভাগ হয়ে গেছে
ওপারে তুমি দাঁড়িয়ে খিলখিল হাসছো
তোমাকে অমন বিশ্রী দেখাচ্ছে কেন!
আমার ডান পা ফুলে যাচ্ছে
আমি পেছন ফিরতে পারছি না
আমি পেছনে ফিরতে পারি না
আমার শরীর-মন, আমার সবকিছু
পুড়ছে;আমি ব্যাথায় নীল হয়ে যাচ্ছি
আমাকে মুক্ত করো, আমি পণ করছি
তোমাকে হারানোর শোকে তেত্রিশটি
কবিতার বদলে, তোমাকে পাওয়ার সুখে
পুরো পৃথিবী নতুন করে লিখতে পারি,
আমি কবি হয়ে যেতে পারি।


মালিক ফাহাদ