এটি কোন সাধারণ কবিতা না। আমার একার কবিতাও না। একদিন আমি আর আমার বন্ধু (আলোকিত অন্ধকার [ছদ্ম নাম]) কবিতার খাতা-কলম অদল-বদল করে করে অভিনব এক কবিতা লেখার খেলায় মেতেছিলাম...সেই কবিতা-কবিতা খেলতে খেলতেই, এ নতুন কবিতার জন্ম...


ঝিঁঝিঁপোকার ঘুম


এখন অনেক রাত...কোন ঝিঁঝিঁপোকা জেগে নেই...
কচুরিপানা গুলো অপেক্ষা করছে...
সকাল হলেই ফুলগুলোকে মেলে ধরবে বলে...
হলুদ-নীল-বেগুনী'রা সবুজের সাথে মিলেমিশে যাওয়ার লালসায় উন্মত্ত...
আর সবগুলো বাচ্চাকে মুখে পুরে রাখা-
'মা' মাছটা কাটিয়ে উঠবে সমগ্র রজনীর তন্দ্রা।
সূর্যের সোনালী রঙে স্নান করাবে নাড়ি-ছেড়া মানিক-রতনদের...
পাখার লাল-লাল ফোঁটা গুলো লালচে করে তুলবে গভীর কালো জলকে...
...এসব নিশাচর ঘটনারা বিব্রত করতে পারে না আমাকে...
আমার সময় কাটে ক্ষুদ্র-গন্ডীর এ জীবনটার-
পরিধিকে আরো বিস্তৃত করার পরিকল্পনাতেই...
না...কোন কিছুই হারাতে দেবো না আজ...
রাত বাড়তে থাকুক...ঝিঁঝিঁপোকারা একসময় জাগবেই...


এমনি জেগে জেগেই গাইতে হবে-জাগিয়ে তোলার গান।
আমিও আমার বেহালায় ঝংকার তুলবো তাদেরই সুরে...
বেহালার তারে জমাট বাধা মরিচা'রা মন্ত্রমুগ্ধ হবে...
খালি গলার জ্বালাময়ী গানের উন্মাদনায়...
সুরের রাজকীয় ঝংকারে কাপিয়ে তুলবো এক যুগের মরিচা।
কেঁপে উঠে খসে পড়বে বেহালার তার থেকে...
আর সেই সাথে আমার জীবন থেকে ঝরে যাবে প্রাগৈতিহাসিক বিষাদ।


আমি বসে থাকবো জানালার পাশে...
পূবালী হাওয়া আর প্রথম স্বর্ণ-কিরণের অপেক্ষায়...
মৃদু-মন্দ আর হিম-শীতল বাতাস ছুঁয়ে যাবে...
কপালের চুলগুলোর আলতো সুরসুরি উপভোগ করবো...
বুকে বাজবে...স্বাধীনতার সুর...
তীব্র আলোর উত্তাপে এক সময় স্বীকার করতে বাধ্য হবো-
আমি স্বাধীন নই...আমি মুক্ত নই...
আমি চাইলেই, আকাশের তারাগুলো দিয়ে 'গুলি' খেলতে পারি না।
আমি অনুগত...
চাইলেই বাতাসে ছড়িয়ে দিতে পারি সুরের নান্দনিক কম্পন...
চাইলেই দূরের ঘাসগুলোকে দেখতে পারি আরো সবুজ করে...
অথবা এই বিচিত্র জীবনের দিকে পিঠ ফিরিয়ে দিয়ে পারি ফিরে যেতে ...
আমার সেই ফেলে আসা প্রাচীন পথ ধরে...
আমি হাঁটবো দীর্ঘ পদক্ষেপে...
প্রতি মুহূর্তে বাড়তে থাকবে আমার ফিরে যাওয়ার তাড়া।
রাতের অন্ধকারে, অপেক্ষার তাড়া আকাশের তারার সাথে মিলেমিশে যাবে...
রাত বাড়তেই থাকবে...ঝিঁঝিঁপোকারা একদিন নিশ্চয়ই জাগবে..।