বিশাল বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের এককোণে
ছোট্ট গৃহটি আমাদের।
পিপাসার্ত বঙ্গোপসাগরের স্রোতে
মিশে যাওয়া একবিন্দু জল যেন।
আকাশের বিস্তৃতি কিংবা জলধির গভীরতা
এখানে নেই।
নেই বিংশ শতাব্দীর আলোর ঝলকানি।
ডানা মেলে উড়ে যাওয়া গাংচিল
কিংবা সাদা রাজহংসের
জড় রূপান্তর এখানে নেই।
প্রকৃতির স্নেহমাখা শ্যামলিমা
এখানে বন্দী হয়ে নেই
কাঁচের খাঁচায়।
এত কিছু নেই,
তবু যেন আছে কিছু।
চলে যেতে চাইলেও
ডাকে পিছু পিছু।
এখানে-
মমতার পর্বত গলে
ঝর্না হয়ে বয়ে যায়
ভালবাসা, পরম নির্ভরতায়।
নিশ্চিন্তে লুকোচুরি খেলে
রৌদ্র তরঙ্গ
জানালার ধার ঘেঁষে।
গভীর আলিঙ্গনে জড়িয়ে থাকে
এখানে, স্বর্ণাভ সকাল,
রৌদ্রকরোজ্জ্বল সাদাটে দুপুর
কিংবা আবীর রঙা বিকেল।
কালবোশেখীর ক্ষুব্ধ ঝঞ্ঝা উপেক্ষা করে
আম্রমুকুলের সুবাস বয়ে আনে,
গ্রীষ্মের হাওয়া।
ঘন আঁধারে ঢাকা শ্রাবণ রাত
পৌছে দেয় একরাশ কদম শুভেচ্ছা।
ভেসে যেতে যেতে,
পেঁজাতুলোর মত শারদীয় মেঘ
চেয়ে দেখে আমাদের।
হিমেল হাওয়ার স্নিগ্ধ পরশে
কখন কেটে যায়-
হৈমন্তী ছোট্ট বিকেল।
শীতসকালে মিষ্টি রোদ
যখন এসে পড়ে চায়ের কাপে,
মনে হয় সময় যেন থমকে গেছে,
এখানে এসে।
উড়ু উড়ু মনটাকে বেঁধে রাখে
স্বর্ণলতার মত,
বাসন্তী সমীরণ।
খুঁজিনা তাইতো স্বর্গ কোথাও
চাইনা ছুঁতে হিমালয় চূড়াও।
ভাবিনা নিজেকে রিক্ত, নিঃস্ব,
যতনা বিশাল হোক না বিশ্ব।
আমার হৃদয় আমার পৃথিবী,
স্বর্গ এই গৃহ কোণ।
এর চেয়ে বেশী এই জীবনে,
নেই কিছু প্রয়োজন।