আমি পষ্ট চোখে দেখেছি তাকে,
কাঁধে ঝোলানো পাটের থলে আর হাতে জলন্ত সিগারেট;
শাহবাগ থেকে সোজা টিএসসির দিকে,
না- সভ্যতার পরশে ব্যস্ত কোনো পথিকের মতো নয়,
তিনি হেঁটে যাচ্ছেন মৃদুতালে;
ঠিক যেন ডাক হরকরা রাতের আধারে-
সস্তা কাগজে মোড়ানো বার্তা নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে- মহাকালের পথে!
আমি পষ্ট চোখে দেখেছি তাকে,
কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে এসে দাঁড়ালেন তিনি,
অবুঝ শিশুর মতোন নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে তুলে নিলেন- দুটো প্রাণহীন কৃষ্ণচূড়া;
মুঠো ভরে ঘ্রাণ নিলেন, যেন-
যেন তিনি তার প্রেয়সীর কেশ ছুঁয়েছেন,
যেন চিরচেনা কেশের ঘ্রাণে মাতাল হয়ে হয়তো এখনই-
দুহাতে বুকে টেনে নিবেন প্রিয়মুখ প্রেয়সীকে!
তারপর-
তারপর আবার ধীর পায়ে হেঁটে,
না জানি কি ভেবে- দাঁড়ালেন তিনি রাজপথে এসে,
মৃত দুটো কৃষ্ণচূড়া শিয়রের কাছে রেখে-
নিজেও শুয়ে পড়লেন শেষে;
উৎসুক জনতা এসে ভীড় জমালো চারপাশে,
হটাৎ করে ভীষণ চিৎকারে তিনি বললেন,
"হে সভ্যতা তুমি আমাকেও পিষে ফেলো, নিষ্পাপ কৃষ্ণচূড়াদের মতো!"
তীব্র এ প্রলাপ শুনে সভ্যতা হেসে গড়ালেও,
আমি পষ্ট চোখে দেখেছি তাকে,
তার পাথুরে চোখদুটো থেকে দু'ফোঁটা উষ্ণ রক্ত চিবুক বেয়ে গড়িয়ে পড়লো-
নিষ্প্রাণ কৃষ্ণচূড়াদের মৃতদেহে!