এই মহামারী শেষ হলে-
ছুটে চলে যাবো ঠিক মধুমতী পাড়ে;
নদীতে তখন আঙ্গুর রসের মতো টলোমলো জল,
তৃষ্ণার্ত হাঙ্গর হয়ে সবটুকু জল আমি শুষে নেবো।
হেঁটে যাবো হাউজিং রোডে পথভোলা পথিকের বেশে,
নরম সবুজ ঘাসে পদতল ফেলে-
ঘাসফড়িংয়ের মতো প্রশান্তি খুঁজে পাবো।
এই মহামারী শেষ হলে-
আমি হয়ে যাবো এক খাঁচাহীন পাখি;
মুক্তির স্বাদে দূরাকাশে ডানা মেলে উড়ে বেড়াবো,
কতোদিন হলো আমি মেঘদল দেখিনা,
মহামারী শেষ হলে মেঘেদের গায়ে ঠিক আল্পনা এঁকে দেবো।
আমি হবো সন্ধ্যারাতের শুকতারা মৃদু আলো;
রাতে জেগে জেগে আকাশের সাথে কথা বলবো,
এতোদিন ধরে আকাশের বুকে জমে আছে যত ব্যথা,
এবারে আমি সব ব্যথাটুকু ঠিক প্রশমিত করে দেবো।
এই মহামারী শেষ হলে,
ছুটে চলে যাবো আমি টঙ দোকানে,
একের পর এক চা-সিগারেট আর রাত্রির সুধা পান করে যাবো,
উদ্যমী বাতাসে ফসলের মাঠে বাতাসের দোলা-
চায়ের কাপের পরিচিত শব্দে মুগ্ধতা খুঁজে পাবো।
আমি ছুটে চলে যাবো ঠিক অরণ্যের কাছে;
বুনোফুল থেকে কাঁটাঝোপ গুলো সযতনে সরিয়ে দেবো,
আলতো ছোঁয়ায় নমনীয় হবে লজ্জাবতীর পাতা,
মলয়ের কাছে গিয়ে অযতনে পড়ে থাকা শিউলী কুড়াবো।
এই মহামারী শেষ হলে,
ছুটে চলে যাবো আমি প্রেমিকার কাছে,
সব চক্ষুলজ্জা ভুলে তার গোলাপের বৃতিতে চুমু এঁকে দেবো,
মেহেদি পাতার মতো টকটকে লাল হবে প্রসন্ন মুখ,
বিলম্ব ব্যথা ভুলে দৃঢ় আলিঙ্গনে তাকে বুকে টেনে নেবো।
আমি হয়ে যাবো এক অন্য মানুষ, অন্য ভুবন;
কচুরিপানা, ঘাসফুল আর ঝিঁঝিদের ডাকে ছন্দ খুঁজে পাবো,
এই মহামারী শেষ হলে আমি হবো এক জীবন্ত উপমা,
ততোদিনে, ঠিক ততোদিন, শুধু কবিতাই লিখে যাবো!