আলিঙ্গনে জড়ানোর আশায়
আমাকে দেখলেই তারা ছুটে আসে
আমায় আলিঙ্গনে জড়াতে চায় ।
তবে আমার সাথে তাদের আলিঙ্গনটুকু অন্যরকম
আমরা জানি তাদের কোন হাত নেই
এজন্য বহুদিন তারা হাপিত্যেশ করেছে
হতাশায় কুঁকড়ে রয়েছে মাটির কাছে।
হাত না থাকায় বহুবছর তারা আমার সাথে আলিঙ্গন করতে আসেনি
একদিন আমি তাদের কাছে টেনে বললাম "হাত নেই তো কি হয়েছে
হাতের কাজ অন্য কিছু দিয়ে করো। মানুষ হাত ব্যবহার করে খাবার খায়
আবার হাত দিয়ে আলিঙ্গন করে। তোমাদের যেহেতু খাবার খেতে হাতের প্রয়োজন হয় না,
মুখ দিয়েই খাওয়া দাওয়া সেরে নিতে পারো
সেহেতু মুখ ব্যবহারেই আলিঙ্গনে আসতে পারো।


সেই থেকে শুরু তাদের সাথে আমার পিরিতি।
তারপর আমাকে দেখলেই তারা নব উদ্যমে ছুটে আসে
গরু তার ভোঁতা শিং নাড়িয়ে এসে আমাকে শূন্য ছুড়ে দেয়
এটাই নাকি তার আলিঙ্গনের স্টাইল।
কুকুর দৌড়ে এসে ঝুলে রয় আমার হাঁটুতে
আমি করি চিৎকার আর সে হেসে একাকার
এ যেন এক দারুণ খেলা।
হেসে হেসে সে ফুটিয়ে দেয় তার দন্তসকল।
তখন আমার চোখে ভেসে বেড়ায় ১৪টি ইনজেকশনে সুচালো সুচের ভয়।
আমাকে দেখলে বেড়াল থাবা থেকে বের করে যত্নে লুকানো নখ
তা দিয়ে আঁচড় দিয়ে যায় আমার গাঁয়, আর আমি তখন খুঁজে বেড়ায়
কলাপাতায় লবণপোড়া।
কোথা থেকে বেজী এসেও ঝুলে পরে আমার আঙ্গুলের ডগায়
কিন্তু আমি বেজী দেখিনি দেখলাম ১৪টি সুচালো সুচ।
বেজী তাড়াতে এসে সাপ ছুঁতে চায় আমায়, আমি তখন ছুটে পালাই।
মশা যদিও পশু নয় তবুও আমাকে তাদের নিত্য চুম্বনের কথা
আর নাইবা বললাম।


মনে হয় এসব মুর্খ পশুদের পিরিতিই ভালো
অন্তত তাদের আলিঙ্গনের ক্ষত দ্রুত
সারিয়ে তোলা যায়,
কিন্তু যে পশু ঘুরে বেড়ায় মানুষের রূপ ধরে,
যে পশু বন্ধু রূপে এসে খুন করে যায় চুপ করে
যে পশু চিনে না আপন পর বুঝেনা ভেদাভেদ
যে পশু পরিবারে ঢুকে পরিবারকে করে ব্যবচ্ছ্যদ
তার আলিঙ্গনের ক্ষত কভু সারে না, সারিয়ে তোলা যায় না।
যুগের পর যুগ কেটে যায়, শতকের পর শতক
সেই ক্ষত কখনোই আর সারে না।


-২৬ চৈত্র ১৪১৯