প্রায় নয় বছর পর তার সাথে হঠাৎ পথে দেখা।
চোখে চোখ পরতেই আমাকে সে প্রশ্ন করে,
-কেমন আছো?
-এইতো দিন যাচ্ছে চলে, হেলে-দুলে।
-তুমি সেই আগের মতই আছো!
-হয়ত আগের মতই রয়ে গেছি, যেন আমাকে চিনতে কারো অসুবিধা না হয়।
-কারো বলতে কি আমাকেই বুঝাচ্ছো নাকি অন্য কাউকে?
-হয়ত তোমাকেই অথবা অন্য কেউ।
-ঘুরিয়ে কথা বলার রোগটি এখনো রয়ে গেছে তোমার মাঝে,
তোমাকে চিনতে আমার অসুবিধা হবে এটা কিভাবে ভাবলে?
-আমি কোন ভুল বলছিনা বা ভুল ভাবিনি।
এখন তোমার চারপাশে কত নতুন মুখ, কত প্রিয়জন।
তোমার হাসিমাখা বদন আজ মুগ্ধ করে অন্য নয়ন।
তোমার দৃষ্টির উঠোনে আজ সন্ধ্যে নামে নতুন আয়োজনে।
আর তাতে আমাকে ভুলে যাবেনা তা ভাবাইত আমার জন্য ভুল।
-নিজেকে কি ভাব তুমি বলত?
-তুমি-তো জানোই নিজেকে সাধারণ একজন ব্যতীত অন্য কিছু কখনো ভাবিনা।
-তুমিকি জানো সাধারণ বেশে থাকতে থাকতে তুমিই হয়ে উঠছ অসাধারণ।
অনেক সাধারণের ভিড়ে সহজেই আলাদা করা যায় তোমাকে।
-হা হা হা!
হাসালে মোরে ওগো মোর অতীতের প্রিয়,
তুমি তো বুঝনি আমি আজ কতটা নিন্দনীয়।
-তুমি নিন্দনীয় নও, বরঞ্চ অনেকের পূজনীয়।
-তাই বুঝি দুরে সরে গিয়ে সবাই আমার পূজায় মত্ত হতে চায়।
আমিতো কভু চাইনি কারো পূজনীয় হতে,
চেয়েছি শুধু কারো হাত থাকুক আমার হাতে।
-আমাকে ক্ষমা করো যদি কোন কষ্ট দিয়ে থাকি তোমায়।
-তুমি কখনো আমাকে কষ্ট দাওনি,
আমিই কষ্টকে আপন ভেবে কাছে টেনে নিয়েছি।
কষ্টের ভেতর যে সুখের সন্ধান আমি পেয়েছি তা তুমি খোঁজনি।
-ধীরলয়ে সন্ধ্যা নামছে, খানিক-বাদেই অন্ধকার ধেয়ে আসবে,
গ্রাস করবে চারপাশ। আমাকে ফিরতে হবে, তুমি যাবেনা?
-যার জীবনে আলো নেই, আঁধারে তার ভয় কি!
তুমি যেতে চাচ্ছ যাও ফেরা-বোনা। তবে এই কথাটুকু জেনো,
কখনো পিছু ফিরোনা।
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সে চলে গেল,
আর আমাকে তীব্র অন্ধকার ঠায় দিল তার আঁচল তলে ।