তাঁর তমোঘ্ন হাত ধরে হেঁটেছি হাফ শতক
ছেওরা-শৈশবী অশ্রু ছিল কখনো নিরব কখনো স্পৃশ্য ,
আয়ুবি আমলে হুমায়খালি পুল পাড়ি দেয়া
ডিঙাপোতা হাওড়ে বড় ডিঙ্গায় পালের হাওয়ার সাথে সখ্যতা
কোলে কাঁধে পিঠে পাঁজরে চেপে শিশুত্ব ছাপিয়ে বড় শিশু হয়ে উঠি ।
উত্তাল ষাটের শেষে দত্ত স্কুলে ভীরু ভীরু পা রাখা
সেই শুভ্র-সোহাগী হাত চেপেই।
এক যুগের বেশি মগড়া পাড়ের মলয়ানীলে অম্লজান যুগায়
সেই দখিনা-ধবল হাত ।
কৃষক আক্কেল কাকুকে কদমবুচি করা
ট্রেন বাসে’র টিকিট কাটা
দিলিপের সেলুনে দিলিপ কিংবা স্কয়ার কাটা
চুলের সিঁথি আঁকা সার্টের বোতাম সাঁটা
সকালে মসজিদে ছোঁটা
সন্ধ্যা রাতে ‘হাসনা টকিজে’ ধ্রূপদি ছবি দেখা
প্রাপ্ত বয়সে মগড়া স্রোত থেকে বুড়িগঙ্গায় মিশা
সবসময়ের সংগ সেই হৃষ্ট হাত দুখানা ।
আচমকা স্ট্রোকে থেমে যায় হস্তদ্বয়
বয়স তার তখন সত্তরের কোঠায়
পাতলা হয়ে যায় চুল-উত্তমীয়,
উবে যায় উষ্ণ চাহনি
ডাহুক ডাক, সৌম্য-স্মিত হাসি ।
হেমন্তের এক সন্ধ্যায় হস্তদ্বয় ঊর্ধ্বমুখে উড়াল দেয়
পেরেশানিতে পরানে পানি পরে আমার ও আপনদের
যেন আধা শতকের আঁখিতে জল-আকরের নীরব নীড়
সারা জীবনের তরে ,
অগ্রান থেকে কার্তিক - করুণ সুর নিলয়ে নড়ে ।
তার পূতাত্মা পুরিত থাকুক স্রষ্টার শান্তির লহরিতে
তাঁর হাতখোলা হাত দুখানি- দ্যুমণি আমার ,
জৈমিনিক জোছনা জ্বালাক ঊর্ধ্ব জমিনে ।
ঢাকা
২৩ অগ্রহায়ন,১৪২৫
০৭.১২.২০১৮