প্রায় প্রতিদিন এই পথ ধরে ধীরে ধীরে চলে এক অচিত্রিত চিত্রকর, কৃশ অঙ্গে নিজ ঢঙে ডিগ্রিহীন; দূষিত  নগরে বস্তির ডেরায় জন্মেছিল কৃষ্ণ পক্ষে, এখনও সেখানেই সরু গাত্র নিয়ে দিনপাত, চেনে তাকে সবে সেও চেনে আশপাশ- ডন নেতা পক্ষী লতা, শহুরে শাখীর পাতারা তার সাথে দোলে, চিত্রনেত্রা উলু দেয় তাকে যেন সেও পাখিদের দলে - সে যে হাসে পাখিদের তালে ।            
পথে স্কুল-শিশু তাকে দেখে, কেহ কেহ কথা বলে ফুলেল নিলয়ে; কোন কোন রিক্সা শ্রমী
থেমে যায় তাকে পেয়ে এটা ওটা সুধায় সরল-দরদী স্বরে যেন সেই উদার গ্রাম্যতা, তবে কোন যন্ত্র যান থামেনি বরং চলে  কাদা পানি ধূলি বাজিয়ে –ভিতরে কুশিল মনিব- দুদক জালে দোলে – পাত্তাহীন পথ বিধি ।  
        
চিত্রক সাজায় ষোড়শী রিক্সাকে - আত্মস্থ করেছে আপন প্রজ্ঞা-প্রভায় পিতার পুরনো রিক্সা থেকে, আর কিছু  শিখা হয়নি জীবিকা তরে ; নিজ দেহকোষ পায়নি সুডোল সাম্যতা,সমাজ শুঁকেছে অসাম্যের বিষ ফুল –ওঝা  নেই ভবে বুঝেছে রিক্সার টুংটাং স্বরে । ধার ধারা থেকে দূরে থেকেছে ধারালো ধী ধারিয়ে –যেথায় জন্মেছে সেথায় হয়েছে ধারিণী ;        
শিল্প-তনু বহু আগে থেকে বাড়ে আত্মবাণে অতি ধীরে প্রথাহিন পথ্যহীন, তবু সেই জ্বলে উঠে চিত্রে যেন রবী’র অদেখা তুলনাহীনা, তুলতুলে হয়নি যাপন আড়াই যুগের জীবন, কেবল হাতের তুলিটি মিশেছে প্রণয়  রাগিণী রাঙিয়ে ।  
    
সে যায়নি কখনো বুড়িগঙ্গা পাড়ে তবু শ্বাস ছাড়ে নদী পাখি বৃক্ষ লতা মাহি জয়া অপু তার হৃদিক    ছবিতে ; হয়ত সকল বেদনা বঞ্ছনা গঞ্জনা জারিত হবে তার অনাগত চিত্রকাব্যে ; কোন মিনি মোনালিসাকে দেখবে সবাই সেগুন বাগিচায় সিডনিতে ইউটিউবে ; ক্যাঙ্গারু কোকিল চাহিবে যূথ চোখে – খোলে যাবে  সব কমো কলি ।                    


‘সহমর্মিতার সংবেদন’  


মিরপুর, ঢাকা। ২৫.০৮।২০২২