একটি টিনশেড বাসা
মগড়া’র ধারে, মফস্বল শহরে
নিরিবিলি ছিল, সামরিক শাসকের সময়ে ।
আশে পাশে সবুজে ঘেরা
ধানক্ষেত বাঁশঝাড়
রিক্সা চলা মেঠোপথ
শান্ত শিশির
শান্ত শশী
শান্ত বাতাস
শান্ত বিড়িশ্রমিক
শান্ত প্রান্তর
শান্ত টিনচালা মসজিদ ও মন্দির ।
ছিল ছোট ডোবায়
নির্বিষ সাপ ব্যাঙ মাছ ও শ্যাওলার বসতি, যেন গনতান্ত্রিক সহাবস্তান
মুরব্বিয়ানায় ছিলেন ফটিকচান ।
কলা নারিকেল মেহগনি কৃষ্ণচূড়া গইয়ব সুপারি আম অর্জুন
কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে বেড়ে উঠেছিল আর বিলাচ্ছিল অবারিত অম্লজান
তারিমধ্যে রাখাল বালকের উচ্চস্বরের মাইটটা গান ছিল যেন ফিউশান ।
এখন বড় রাস্তা, পীচের সাথে ফাইটফুকুর , নানান ধরন
এখন বিদ্যুতের খুঁটির সাথে জনগনের পশ্চাৎদেশে নিরব জ্বলন ;
ধানক্ষেতে নবধনীদের ধুমধাম রঙিন বাড়ী
কোথাও গম কোথাও মাদক কোথাও বাংলা ক্যাসিনো’র হৃদনষ্টা গন্ধ
কালো কয়েনের কুৎসিত কুলকুলনিতে আলয়গুলি আড়ষ্ট ।
তবু , টিনশেড বাড়িটিতে
দরজা খোলতেই ভোরের আলোয় গোলাপ হাসে ,
কুয়াশা কাটা রোদ কদম গাছের ফাঁকে
বিবিধ তৃণলতায় ছোট ছোট রঙিন কুঁড়ি
অলখেই থেকে যায় এসব
পাশের বিল্ডিঙে তখন কৃত্রিম সাজ-সজ্জায়রত কোন কনে ।
শিশিরভেজা ঘাসগুলি নরম পদের তৃষায় তৃষিত
অংশুর শিল্পিত শলায় স্বল্পস্থায়ী শব্দহীন শিল্প উৎসব চলে
যে জন দেখার সেজন দেখে প্রভাত প্রার্থনা শেষে ,
দুষ্টু কিশোরদল আচম্বিতে তোলে নেয় আঁখ কাটি
ভরে উঠে সুখাস্রুতে মানব আঁখি ।
একটি টিনশেড বাড়ি– জনকের টানটান আর্থিক রেখার শীর্ষবিন্দু
এখনও গোলাপ শিশির বিটপী দেয় নিরন্তর নিদ্রালু
যতই উঠুক চারপাশে ধূসর গাঁথুনির কাঠিন্য-অকাব্যিক ।