বর্ণালী এ জীবনে আমার মেঘ-রৌদ্রের খেলা,
লুকোচুরি আর গল্পে-গল্পে কেটেছে অনেক বেলা।
দোসর হয়েছি আলো না আঁধারের, খবর রাখিনি তার
সর্বজ্ঞ দর্শী, সুবিচক্ষণ মহান-করিবেন তার বিচার।
জীবন খাতার পাতায় পাতায় প্রশ্ন রাখি আজি,
জানতে চেয়েছি কি কভু, কে আমি,’আমার আমি’?


সমর্পিত - এ জীবন আমার ধরণীর মায়া-বন্ধনে,
ভালবাসা খুঁজেছে চিরতরে শুধু মানবের বন্দনে।
কল্পনা আর আবেগ যেথায় করেছে আমারে নব্য,
সবুজ পাতার স্পর্শে লিখেছি প্রতিদিনের কাব্য।
তব ভুলেছি আমি বিশ্বালয়ের সৃষ্টি-প্রলয় বাণী
নিবেদিত প্রাণ খুঁজিনি সে পথ কোথায় আমি ঋণী।
দেখি নাই আমি কোথায় অসীম, কোথায় তার অস্তিত্ব,
জানি নাই আমি আদোও “আমিরে”- বিকশিত না সুপ্ত?
সময়ের সাথে চলেছি ছুটে তাকায়নি ফিরে পিছু,
দিন শেষে আমি রইব কোথায়? জানা হল না তার কিছু।
হঠাৎ যেদিন প্রিয়জন আমার চলে গেলো গোপনে
প্রভুর কাছে চাইলাম ক্ষমা নিভৃতে, নির্জনে।


দৃষ্টি আমার দেখে নাই আলো, জানে নাই যে বিশালতা,
মার্জনা কর প্রভু, দূর করে মোর সকল অপরিপূর্ণতা।
দিনে দিনে বেড়েছে আমার যত জীর্ণতা আর অসারতা,
ক্ষমা কর প্রভু, তার তরে মোর সকল অপারগতা।
নির্লিপ্ত, নির্বাক আমি আজও হয়ে আছি নির্জীব?
ধিক্কার দাও প্রভু, জাগিয়ে আমার অচল, নুহ্য হৃদ।


জ্বলছে আমার এই প্রাণ আজি আত্মগ্লানির অনলে,
বুঝেছি কি তবে, মোর ভুল আমি জীবনের এই লগণে?
করছি আমার প্রার্থনা প্রভু তোমাতে নিবেদন করে,
নিজের বিচার করতে দাও তুমি ‘আমার এই আমিরে’।
হিসাব আমি মিলাব আমার জ্ঞানহীন এই আত্মার
জেনে নিব আজ ‘আমার আমিতে’ রয়েছে কত আঁধার!


সরায়ে মোর নির্লিপ্ততা আজি, করতে চাই “আমিরে” জয়,
ঘুচাতে চাই সব জমানো ব্যাথা আর শাশ্বত অবক্ষয়।
শুদ্ধ প্রাণে দাঁড়াতে চাই প্রভু শেষ বিচারের দিনে,
“এই আমি” তব শান্তি পায় যেন মৃত্যুর আলিঙ্গনে!