প্রচন্ড গড়মে পৃথিবী পুড়ছে, পুড়ছে বাংলাদেশ।

পুড়ছে চোখের পাতা ঝাপসা হয়ে আসছে দৃষ্টির সীমান্ত ,
ষড়্ঋতু হারিয়ে হচ্ছি বৈচিত্রহীন এতিম।

তবু আমাদের কারো চেতনাতে করাঘাত করে না অনূভুতি এতটুকু ।

আমরা অনবরত বৃক্ষনিধন করে চলেছি,
নগরায়ণের নামে জীবন নগর করছি বিপর্যস্ত,
বনের ভেতর ঢুকে গেছে মানুষনামী অরণ্য ইতর।

বিগত দশ বছরে ত্রিশ লক্ষ গাছ কেটে
মনানন্দে করেছি-
মিল,ইন্ডাস্ট্রি,ঘর-বাড়ি,বউ নিয়ে শুয়ে থাকার খাট।

উজাড় হয়ে যাচ্ছে মাইলের পর মাইল বনভূমি ,
অকারণে কাটছি গাছ,বনমন্ত্রী হয়ে খাচ্ছি এসির বাতাস,
চর কিংবা খোলা জায়গা রেখে আধুনিক নগরায়ণের নামে
একেকটি ইন্ড্রাষ্ট্রি প্রতিষ্ঠায় ছাড়পত্র দিয়ে দিচ্ছি বনভূমি ।

যা আসছে লুটেপুটে পকেটে পুরছি,
বাকীটা জনম পায়ের উপর পা রেখে খাবো বলে,
অথচ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যে বড়ো বিপদে ভাবছি না।

পরিবেশ রক্ষায় সোসাইটি করছি,সভা- সেমিনার করছি,
বছর বছর আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে অংশ নিচ্ছি,
জানান দিচ্ছি আমরা পরিবেশের আবর্জনা সাফ করছি ধুয়েমুছে।

অথচ বন কেটে সদ্য তৈরিকৃত প্রতিষ্ঠানের
ফিতা কেটে হাততালি নিচ্ছি,
আমি দেশ প্রেমিক মাথাকুটে মরছি।

একবারও বলছি না এইসব জনগুরুত্বপূর্ণ কথা,
পরিবেশবাদী আমি নিজে বছর নিচ্ছি ম্যাগসেসে পুরস্কার,
স্বার্থের কারণে আমার আজ সাহস নেই কিছু বলার।

তেল গ্যাস রক্ষায় পথে নামছি, পত্রিকার হেডলাইন হচ্ছি,
অথচ এ অমূল্য সম্পদ যে শেষ হয়ে যাচ্ছে
কেউ দেখছি না।

বছর চলে যায়,গাছ কাটা বন্ধ হয় না,
দেশের কোথাও কোন গভীর বনভূমি নেই,
আস্তে আস্তে সোনার বাংলা আমার বস্ত্রহীন হয়ে যাচ্ছে।

সবুজের সেই কোমল শান্তি এখন যেনো বড়ো অপ্রতুল ।

আমার কবিতা লেখার চারণভূমি কই?
আমার হারিয়ে সন্যাসী হবার সেই আলোছায়া কই?
বিলুপ্ত মানবতা চরমে উলঙ্গ নাচে।।

ঘর বন্ধী আমরা যেনো আজ  চিড়িয়াখানার জীব,
এর জন্য দায়ী আমার বিকারগ্রস্ত মানসিক চরিত্র।

না আর নয় আসুন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই,
আমরা আর কোন গাছ অকারণে  কাটবোনা,
কোন বনভূমিতে হতে দেবো না কার্বন নির্গমনের ক্ষেত,
বৃক্ষ আমাদের প্রাণ বাঁচায়,
বৃক্ষের অভয়ারণ্য চাই,
বনভূমির যথাযোগ্য মর্যাদা চাই।

সামনে আর অবহেলা নয়,
আসুন গাছ লাগাই বেশী করে,
এল নিনোতে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হতে দেবোনা এ মাতৃভূমি,
মাঠের সোনারং ধানের মতো
সবুজে সবুজে ভরে দেবো এ বাংলাদেশ।