নিসঙ্গতা ও নদী
..................................... ..........


নিসঙ্গতার আরেক নাম হয়তো নদী,
সে জন্যই বোধ করি ,
সে একা একা বয়ে চলে নিরবধি।
আমিও একা বড়ো একা,
নিসঙ্গ নদীর মতো বয়ে চলেছি
সেই অনন্তকাল অবধি।


মাঝে মাঝে নদীর মতো বাঁক নিয়েছি,
অমাবশ্যার অন্ধকারে উবে গেছে সুখ,
প্রচন্ড পিপাসায় বুকে জেগেছে চর,
কিংবা বাণের জলে ভেসে গেছে ঘর্।


কষ্টগুলো প্রতিদিন পাড় ভাঙ্গে,
বুকের ভেতরকার নদীতে
শব্দে শব্দে ঢেউ তুলে,
বাড়িয়ে দেয় আরও নিসঙ্গতার আর্তনাদ।


নদী ও জীবন সমান্তরালে বহমান,
পাখি ও আকাশ যেনো কবিতা প্রান্ময়;
কেবল তুমি আমি ছিলাম ছন্দহীন,
ছিলো এলোমেলো ব্যাকরণ-সংসয়।


নিসঙ্গতাকে উষ্কে দিতে
আমি আজ নদী পাড় হবো,
ভাঙ্গবো,
নদী ও আমি হবো একাকার্।
জানি তুমি পারবে না,
তুমি তো ভালবাসা শেখনি,
নদীজলে করনি স্নান,
তাই তুমি নিসঙ্গতা বুঝ না
কেবলি বুঝ অন্ধকার্।
..................


ক্ষয়ে যায়
-স-৯৭
.......
বুকের ভেতর ক্রমাগত ভাঙ্গনে ক্ষয়ে যায় উষ্ণতা,
ক্ষয়ে যায় চোখের দৃষ্টির প্রগাঢ় প্রলভতা,
বাস্তবতার অবিচল সংলাপ-বিস্বাস দ্রোহ-নম্রতা,
তাবৎ নীতির স্লোগান-বিপর্যস্ত আজ মানবতা।


ক্ষয়ে যায় নিবেদিত দিনগুলোর অন্ত্যমিলের গান,
আন্তরিক বিপর্যয়ে ক্ষয়ে যায় বোধ-প্রেম-প্রীতি,
বিতর্কিত প্রতিটি সন্ধ্যা ফিরে আসে তুমুল নাভিশ্বাসে,
বাড়ে অনাচার অবহেলা-মুহুর্মুহু বাড়ে মনের ভীতি।


যেনো কোন মোড়কে আবদ্ধ গতানুগতিক গ্রাফাইট জীবন,
অক্টোপাসের মতো ক্ষয়ে বুড়িয়ে হয় চক্রজ অনাবাদি,
সুনন্দ সময়গুলো ক্ষয়ে যায়,ভাটা পড়ে যৌবন জলে,
হারিয়ে যায় জীবন থেকে অনেক কিছু -তবু আমি সুর সাধি।
....


খাঁটি সোনা
...................................................


এই চিত্রল সন্ধ্যায় হাওয়ার ভেতর ছুঁড়ে দেয়া
একগুচ্ছ চুম্বন,
জানি তুমি কুড়িয়ে নেবেনা,
চাদরের ভাঁজে লুকিয়ে রাখবেনা,
ভালোবাসায় যত্ন করে।


জানি তুমি নক্ষত্রের অলিগলি ঘুরে বিসর্জন দেবে না
আমার জন্য একমুঠো প্রেম।


অনাবাদি ভবিষ্যৎ নিংড়ে তুমি
ফেলবে না ছায়া,
প্রজাপতি হাতে ধরে আনবেনা ঝিলিমিলি কবিতার স্লোগান,
আমার এ অন্ধকারের সাথী হতে
তোমার আর সময় নেই,
তুমি এখন জীবনের গল্প লেখ,
সেখানে যদিও আকাশ বাতাস সব আছে,
কেবল আমি নেই।


তারপরও হিসেব নিকেশ করে দেখো,
জ্যোস্নার কাছে প্রশ্ন করে দেখো,
কেমন ছিলো আমাদের সেই অবুঝ রাত্রির মেলডি।


কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকা,
কষ্টকে কাব্য করে রাখা,
কজনার ভাগ্যে জুটে,
কজনার উঠোনে আগুন লেগে পুড়ে
দূর্বার ডগা।
আমি যে পরম ভাগ্যবান
পুড়ে পুড়ে আমায় নিয়ত করে দিচ্ছো খাঁটি সোনা।
.......................................... ..
সূর্য সিঁড়ির গান®
---------------------------------------
কথা ও সুর - কবি নিজে
তাল - কাহারবা
(৮ মাত্রা)


বন্ধুরা দাও সবে হাত বাড়িয়ে,
নিজেকে উর্ধ্বে তুলে ধর,
শব্দে ও কথায় ধ্যানের শপথে
চিত্তখানি বিকশিত কর।


নতুন প্রভাতে সূর্যের আলো,
আমরা দু হাতে আনবো পেড়ে,
মানবতা মুক্তির সাধক হবো,
দুঃখ বেদনা যাবে উড়ে;
সূর্যের সিঁড়ি পেরুতে এসো
সবাই সবার হাতটা ধর।


এসো প্রতিভার করি বিকিরণ,
এখানে সবাই কবি একটাই মন।


গড়তে হবে নিজের স্বপ্নটাকে,
নিজেকে জানাতে হবে বিশ্বলোকে,
পেছনে পড়ে আর থাকবো না যে,
স্বপ্ন ছড়িয়ে দেবো সবার মাঝে;
সূর্যের সিঁড়ি ভাঙ্গতে হলে
নিজের স্বপ্নকে সবাই গড়ো।
......................................
এখন আমি কেমন আছি
--------------------------------------------


একা থাকার চেষ্টা করেছি বহুবার,
বৃষ্টি এসে ধূয়ে দিয়ে গেছে হৃদয়,
ভেতর বাহির শুন্য ছিলো একসময়;
এখন পূর্ণ-তোমায় যখন করেছি জয়।


কতশত নদীপাড় হয়েছি একা একা,
নিঝুম রাতে কাশবনে বসে থেকেছি,
খোলা হাওয়ায় ছিলোনা কোন সংশয়;
যা ইচ্ছে করেছি-পেরিয়েছি বাঁধার গন্ডী,
মা- বাবা কারও বারণ শুনিনি অকারণে,
অথচ এখন তুমি আছ-বলেই মনে এত ভয়।


আসলে আমি ভাল আছি কিনা জানি না,
আমার বলে এখন কিছু নেই-সব তোমার,
আকাশ-বাতাস জানালা গলে আসা রোদ,
কিংবা মধ্য দুপুর,অপাংক্তেয় বিকেল,
উভর্শী সন্ধ্যা,আনমনা অপরাজিত স্বপ্ন সব।


সব এখন তোমার জন্যই রেখে দেয়া,
রেখে দেয়া আনন্দ-হাসি,প্রেম-প্রণয়,
অভিলাস-চিত্রল চরৈবেতি।


আচ্ছা তুমি কেমন আছ?
তোমার চোখের পাতায় ভেসে থাকা
আমার ছবিখানি কি তোমার বিরক্তি লাগে না ?


আমি তোমায় আমাকেই দিয়ে দিলাম,
যা খুশি কর-আমাকে সং সাজাও কিংবা
আমাতে রং মাঁখাও সব তোমার ইচ্ছা।


আমার কোন কষ্ট রবে না,
যদি তুমি বিকেলে ঘরে ফিরে এলে
মিষ্টি করে একটি হাসি দাও।


প্রথম যেদিন তোমার হাসি দেখেছিলাম
সেদিন আমি প্রথম মরেছিলাম
যেদিন আমি চোখে চোখ রেখেছিলাম
সেদিন আমি দ্বিতীয়বার মরেছিলাম
যেদিন আমি ঠোঁটে ঠোঁট রেখেছিলাম
সেদিন আমি তৃতীয়বার মরেছিলাম
তারপর যে কতবার মরেছি
থাক সে কথা না বলাই অন্তত আমার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ।