বোতাম
অফিসের সময় হয়ে গেছে,
জামা পরতেই দেখি—উপরের বোতামটা নেই!
বউ বলল,
‘দাঁড়াও, আমি সেলাই করে দিচ্ছি।’
আমি বললাম,
‘তাড়াতাড়ি করো, দেরি হয়ে গেছে ৷
সে সুচ-সুতো নিয়ে এল,
চোখ টিপে দেখছে বোতামের জায়গা,
আমি দাঁড়িয়ে—জানালার দিকে চেয়ে আছি,
হাত দুটো হাওয়ায় মেলে, কাকতাড়ুয়ার মতো স্থির।
সে সেলাই করে চলেছে,
হঠাৎ সুচ বিঁধে গেল আমার বুকে!
আমি হাঁফ ছাড়লাম—
সে বলল,
‘তুমি একটু স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারনা,
আমি বললাম,
‘আমি তো পাহাড়ের মত স্থির,
সে বলল,
‘তাহলে পাহাড়ে ভূমিকম্প হচ্ছে ৷'
অফিস কামাই ৷বোতাম সেলাই অবশেষে শেষ ,
আর আমার ধৈর্যর সুতো ছিঁড়ে গেল ঠিক তখনই।
তবু কিছু বললাম না—
কারণ আমি জানি,
বোতাম শুধু জামা ধরে রাখে না—
সম্পর্কও ধরে রাখে।
শপিং
শনিবার দুপুরে বউ বলল,
‘চলো, একটু ঘুরে আসি।’
আমি ভাবলাম—বাহ, বড্ড রোম্যান্টিক দিন হবে!
সে বলল,
‘মানে শপিংমলে যাব, সেল চলছে।’
আমি বোকার মতো জিজ্ঞেস করলাম,
‘কিনবে কী?’
সে বলল,
‘দেখে বলবো, দরকার হলে কিনবো!’
দেখা শুরু হলো দুপুর তিনটায়,
প্রথমে জুতা,
তারপর ব্যাগ,
তারপর শাড়ির কাউন্টারে তিন ঘণ্টা।
আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের ক্লান্ত মুখ দেখছি
আর সে প্রতিটি শাড়ি ধরে জিজ্ঞেস করছে—
‘এটা কেমন?’
‘এটাকি আমায় মানাবে ?' '
'এটা পিঙ্ক না ম্যাজেন্টা?’
আমি ভাঙা ভাঙা গলায় বলি,
‘দু’টোই সুন্দর… দুটোই নিখুঁত… দুটোই… নিয়ে ফেলো।’
সে বলল,
‘তুমি কিছুই বোঝো না। আমি কিছুই নিচ্ছি না।’
শেষমেশ পাঁচটা ব্যাগ হাতে, সে বলল,
‘এইবার একটা বেল্ট কিনে নাও তোমার জন্য।’
আমি বললাম,
‘না, আজকে থাক ৷'
বেরিয়ে এলাম—
পকেট হালকা, মন আরও হালকা, পা ভারী।
শপিং শেষ,
মিশন সাকসেসফুল—
বউয়ের মুখে হাসি,
আর আমি ভাবছি—
“রোববার কী আবার ঘুরতে যাবে?”