তিনি মনীষী, দেশবরেণ্য তেজদীপ্ত ‘জ্যোতি’ মহান  ,
পশ্চিম বাংলায় নিষ্কলঙ্ক, তেইশ বছর শাসন কাজ
এক নাগাড়ে, তাও ভোটে , সসম্মানে চালান রাজ ,
যদিও শাসন এক্তিয়ার সীমাবদ্ধতা, দেশের সংবিধান ।
স্বনামধন্য, প্রথিতযশা, সর্বহারার দরদী, বন্ধু-সখা -
তাঁর অপার মানব ভাবনা, পুরোপুরি হ’ল না শেখা ।


ঘাটতি বাজেট তাঁর রাজকালে সময়ে-হয় উদবৃত্ত
বিশেষ ‘কর্’ না বসিয়ে সততায় রাজ-কাজ হ’ত ,
রেশন সামগ্রী কার্য্যতঃ সরবরাহ, গরীবের প্রাপ্য
শিক্ষক পুলিসের মাহিনা বৃদ্ধি ,সবার খোলে ভাগ্য ।
স্ব-অভিমানে বাঁচার সুযোগ , শ্রমিকদের অধিকার -
মজদুর কিষাণ সুখে থাক, তাঁর দরদ ছিল অপার ।


হে গরীব ! গড়ো সংগঠন, তিনি ছিলেন পাশে সদা ,
রাজ্যে ঠাঁই পেত না ,অকাজে অন্যায়ী দুষ্ট দাদা ।
গরীব উত্থানে ন্যায্য বন্টনে,ভারতে হয় তাঁর সুনাম
বাংলায় শাসন শ্রেষ্ঠতর পায়দানে সকলে দেয় দাম ।
নন্দিগ্রাম আর সিঙ্গুরে চেয়েছিল কর্মপ্রসার শিল্পায়ন
কোথা হতে এক কূটচক্রে, সব ব্যবস্থার হয় পতন ।


কত প্রতিকূলে সবাইকে নিয়ে মানিয়ে চলার মন্ত্র
কুখ্যাত গোরখাল্যাণ্ড দেশপ্রতি অন্তর্ঘাত্-ষড়োযন্ত্র ,
জে, পি আন্দোলন , পাঞ্জাবীদের উপর অত্যাচার
কোন দাঙ্গা-ফ্যাসাদ অরাজকতা ছিল না চিহ্ন তার ,
রামমন্দির নিয়ে ইঁটপূজো ,বাংলায়-জয়কার যাত্রা
শান্তিতে রেখেছিল বাঙালীকে গৌরবে অসীমমাত্রা ।
তাঁকে বিশ্ববাসি কতবার ডাকে জানিতে শাসন কথা
সারা জীবন কষ্টে কাটান, বোঝা বয়ে গরীব ব্যথা ।


সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম বিদেশী ভাষায় শিক্ষা ,
আসাম রেল মজদুর একতার ডাকে তাঁর হয় দীক্ষা ।
মজদুর কুটিরে একারেঁধে হাতে কলমে শিক্ষা-ধ্যান
কমরেড জ্যোতিবসু তাই তো তিনি জনদরদী মহান ।
সর্বহারার নায়ককে-‘ওরা ধনাঢ্য’, দেখিতে পারে না ,
তাই ক্ষণে ক্ষণে তাঁর জীবনে মেলে অমাপা যাতনা ।
বিহার রেলস্টেসনে তাঁর উপর বর্ষে দুর্বৃত্তের গুলি
ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান, এ প্রতিহিংসা কেমনে ভুলি ।


দু’দু’বার প্রধানমন্ত্রীর পদ দলহিতে করেন তা’ ত্যাগ
আত্মমর্যদায় সারা দেশবাসীকে করেন তিনি অবাক !
বাংলার বুকে বহু মহাপুরুষের অশেষ আনা-গোনা
জ্যোতিবসু এক কিংবদন্তী ,এর আগে যায়নি শোনা ,
রাজকাজে পরিপক্কতা, গরীব উত্থানে আত্মীক রুচি
তিনি নিলেন শেষ বিদায় ,এক গর্বের ইতিসাস রচি ।


(০১-১২-২০২০)
(জন্ম ০৮-০৭-১৯১৪- মৃত্যু-১৭-০১-২০১০)