বন আর বাঁশে ভরা দীঘির পাড়
বকের বাসা উপরে, এক বাঁশঝাড় ,
ঘণ বাঁশ কুঞ্চিতে সে পাড় ভরা
অচল দৃষ্টি এপাশ ওপাশ আগাগোড়া ৷


মেঘে কখনো ঢাকিলে অম্বর
দিনেতে সেথায় প্রায় অন্ধকার ,
রাতের আঁধারে রূপ ধরে ভয়ংকর !
ভীতুরা মনেতে পোষে অদ্ভুত খবর ৷
কত না রূপ নেয় বাতাস আর ঝড়ে
করুণ শব্দ ওঠে রাতের গভীরে !


ঝড়ে বকের বাসা করে নড়বড় ,
উপরে আবার মেঘের ডাক কড়কড় !
সাথে ভয় ধরায় উভচর বা জলচর
দিবসে কতনা আসে বাঁশবনে খেচর ;
বকের জীবন ধারণ বড়ো সংঘর্ষময়
ওদের এছাড়া নেই, বাঁচার উপায় ৷


কোন ভাবে বেঁচে আছে একটি ছানা
তাকে নিয়ে বকের শুধু ভাবনা ,
বক আর বগুলা ছানাটিকে যত্ন করে দু’বেলা ;
ছাড়ে না তাকে কক্ষনো বাসায় একলা ৷


এক বক, যখন আধারের খোঁজে যায়
তখন অপরে, পাহারায় থাকে বাসায় ,
পাখা মেলে বক চলে নীল গগনে
ছানাটার চিন্তা থাকে অশেষ তার মনে ;  
ব্যাঙ বা মাছ খাবার ঠোঁটে ধরে
পুনঃ, ফেরত আসে সে নিজ ঘরে ৷


বর্ষা বাদল বা তীব্র শীত ,
শুধু আশা মনেতে পোষে ছানাটির হিত ৷
আদরে জড়িয়ে পাখা দিয়ে ঢেকে,
তারা বাঁচায় তার ছোট্ট ছানাটিকে ৷
ঝড়ে বাঁশ নড়ে শব্দ ওঠে মড়মড় ,
খড় কুটোর বাসা বেজায় নড়ে থরথর !
বাসার নীচে দীঘির গভীর কালো জল
উপরে মেঘগর্জন অতি ভয়াল !


বক বুঝায় তার ছানাকে,-দেখো বাছা ,
এভাবে আর যায় না বেশী দিন বাঁচা !
উপরে খেচর, ওরা ভরে ভরপুর
শত্রু, তারা মারিতে করে না সবুর ,
দৈবাৎ পড়িলে দীঘির জলে
তৎক্ষণাৎ মাছেরা ধরে খাবে সবে মিলে !


এক দিন, বকের যাত্রা কালে মাঝ পথে
এক হিংস্র বাজ শিকারে মাতে ,
তার তীক্ষ্ণ নখে বককে ধরে
বাজ, বককে মেরে উদর ভরে ৷
খাবার নিয়ে ফেরেনি বক সেদিন সাঁঝে ,
বগুলা পায়নি তাকে অনেক খুঁজে !


আহার যোগাড়ে পরদিন বগুলা
মেটাতে ছানার ক্ষুধার জ্বালা !
বগুলা চলে আনিতে আহার
ফিরিতে বুঝি দেরি হয় সেদিন তাহার ,
দেখে, দাবানলে পোড়ে বাঁশ ঝাড় ,
করুণ ডাক ভেসে আসে কান্না ছানার !
ছানাটি বাঁচাতে বগুলা মানে হার ,
তার ঠোঁটে ধরা রয় বাচ্চার খাবার !


(ইং-১৮-০৩-২০১৬-শুক্রবার)