আইজ্যাক নিউটন
বিজ্ঞান জগতে যার আগমন -
নবযুগকে করালেন স্মরণ,
বস্তুর পরস্পর অবস্থান -
স্থায়ী অবস্থা বা চলমান-
সংঘটিত শুধু মাত্র আকর্ষণ ৷
আকর্ষণ টা যে কী ?
এর আগে কেহ ভাবেনি ৷
প্রথম নিউটনের মনে
সুক্ষণে তিনি জেনে ,
তোলেন মহা আলোড়ন -
করালেন বিশ্বে স্মরণ ৷


বস্তু স্থিতির তিনটি নিয়ম
নিউটন-ল-হল কায়ম ,
পূর্বে ধরায় ছিল যদিও বিদ্যমান -
এ ভাবে কেহ দেখিনি তখন ,
কোন মানুষে সেই আকর্ষণ
হুঁশে আসেনি ঐ সবের কারণ !
কখনো করেনি ভ্রুক্ষেপ
না ছিল কোন আক্ষেপ ৷
এসব উপায় পেতে
বিশ্ব যাতে -
আগে বাড়ে
মন কাড়ে ,
বৈজ্ঞানিক কাজে
সবার মাঝে
নূতন সাজে
যে কাজ ছিল দুর্গম -
তাহা হয় অতি সুগম,
পেয়ে নূতন নিয়ম
নব নিয়মে জাগে ভূবন
এল এক নূতন আলোড়ন ৷


একদিন বিকেলে আপন মনে
বসে মুক্ত বাতায়নে
বই নিয়ে পড়া থুয়ে
কিসের তরে চিন্তায় মগ্ন,
এতো নয় কোন স্বপ্ন !
মনেতে ভাবনা বাড়ায়
গাছ থেকে আপেলটি পড়ায় ৷
এমনি করে কত পড়ে
সর্বস্থানে যুগ যুগ ধরে,
ফল কত না পড়ে !
এমনি করে নীরবে বা ঝড়ে ৷
কেউ ভাবে না অযথা-
এ নিয়ে ওঠে না কোন কথা,
কোন জনে কাহারও মনে-
না-এ বিষয়টা চিন্তায় আনে,
লোকে শুধু এটাই জানে-
না পড়িলে আশেপাশে-
যাবে কী নীল আকাশে !
এ সব হাস্যকর কথা -
কাহারও ছিল না অত চিন্তা
ছিল না মাথা ব্যথা ,
ফল সাধাণতঃ পড়ে ভূমে
উপরে যাবে না সে ভ্রমে ৷


নির্জন গাছের তল-
পেলে পাকা ফল ,
বাচ্চারা সকল-
করে কোলাহল-
নেয় দুহাতে তুলে-
আনন্দে ওঠে দুলে;
পেয়ে পাকা ফল
মুখে আসে জল -
বাচ্চা তখন হয়ে তন্ময় ,
সব ভুলে ফলটি খায় ৷


নিউটন ভোলে না
ফলটা উঠায় না ,
দেয় না ধ্যান -
গভীর চিন্তায় ম্লান !
পড়ে আছে ফলটি মাটিতে ,
নিতে কাছে যায় না উঠাতে -
একমন চিন্তামগ্ন নিউটন !
ব্যাপারটা নহে সাধারণ ৷
ফলটি কেন পড়ে তলায় ?


আছে কোন গূঢ় রহস্য ,
নতুবা ফলটি সহর্ষ -
উপায় হয়তো পেত,
ঊর্ধ্বমুখে চলে যেত ৷
কিন্তু ফলটি রয় -
গাছের তলায় -
এমন কেন হয় ?
জানিতে হইবে উপায় !


কঠোর গবেষণা করে
সাধ্য মত মনের জোরে
লিখিলেন অবশেষে
এক শোধ পত্র,
খুঁজে পেলেন
আবিস্কার করিলেন-
মহাকর্ষ সূত্র ,
জগৎ বিক্ষাত নিউটন-ল ;
এটাই প্রমাণ হল
এক দিন সারা বিশ্বে ,
সকলের জন্য
নিয়ম হল মান্য -
সত্যটা অবশেষে ৷
তিনটি নিয়ম-
হল কায়ম
বিশ্ব চলার পথে ,
বিজ্ঞান হিতে-
গবেষণা সুগম হয় যাহাাতে ৷


প্রথম-----
মহাকর্ষ সূত্র হল
বস্তু গুলো
সর্বদা থাকিবে ,
কোথাও না যাবে
রহিবে চির স্থির-
এককে অপরের
গুরুত্বাকর্ষণ বলে
হবে না অস্থির ৷
যতক্ষণ না
বল পাবে না
বাহ্য হতে-
পারিবেনা নড়িতে চড়িতে ৷
বস্তু যদি হয় গতিমান
একই মতি
বিনা বাধায়
অনন্তকাল ধায় ৷


দ্বিতীয় হল-
বস্তুর ভর বেগের
পরিবর্তন হার-
প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক-
এবং পরিবর্তন ও প্রয়োগের ,
সামনের দিক ৷


নিয়ম তৃতীয়-হয় -
বস্তুর অবস্থান দেখায় -
হলে অপসরণ
প্রয়োগ বলের ধরণ
সামনে যতো
বিপরীত ততো
সমান মতো ,
দিতে হয়-
তবেই বস্তু
স্থির রয় ৷


বিশ্বের যতো বস্তু আছে ৷
গুরুত্বাকর্ষণ বলে ঘুরিছে
যারা স্থির তারাও ,
দেখিতে জড়বত মত -
আসলে নিউটন নিয়মে ,
বস্তুর স্থান অবধারিত ৷


জগদ্দল পাথর-
আর স্থাবর অস্থাবর,
যতো বস্তু আছে-
এই বিশ্ব মাঝে-
একে অপরকে-
নিজের নিজের দিকে-
আকর্ষণ করে ;
যে যতো পারে
ক্ষমতার জোরে
রেখেছে ধরে ,
কেহ যায় না সরে-
ঘুরে ফিরে রয় পড়ে ৷
ধরায় জিনিস হয় না উদাহ
স্থান ছেড়ে ভাগেনা কেহ,
যেমন ফলটা-
সাগরের জলটা-
পাহাড় পর্বত কটা-
গুরুত্বাকর্ষণ বলে,
পড়ে থাকে ভূতলে-
এজন্য ফলটি উঠেনা উপরে ,
সর্বদা নীচে ঝরে ৷


আইজ্যাক এঁর
সর্বদা আদুরে কাছের
ছিল এক কুকুর-
রাত, সকাল, দুপুর-
সঙ্গে রাখিত,
তাকে খুব ভাল বাসিত ৷
একদিন কুকুর-
করে না সবুর-
সময় ছিল সন্ধ্যে-
মালিকের অজান্তে-
টেবিলের উপর-
ছিল ভরপুর,
অনেক কঠিন থিয়রী ,
সর্বনাশ হল তাহারি !
ল্যাম্পটা ফেলে-
দিল সব জ্বেলে-
কুকুরটি ভুলে-
বই খাতা পুড়ে শেষ !
ঘটিল অঘটন বেশ -
থাকে না অবশেষ !
জ্বলাতে অবাক-
হয় যায় হতবাক-
দেখিয়া আইজ্যাক ! ,
তার অবকাশে
সমস্ত থিয়রী অগ্নিতে মিশে
সর্বনাশ হল
আগুনে জ্বলিল !
জীবনের কঠিন শ্রম
হয়ে গেল কম ৷


এই কুকুরটা
নষ্টের কাঁটা !
এখন কি করি -
ধরি বা মারি ?
রাগ যায় না -
তা হবে না ?
কুকুরকে মারা যাবে না,
নিরীহ প্রাণী কুকুর-
সে জানে না অতদূর !
পারি না করিতে
তাকে দূর দূর  ৷
কী পরিমাণ এ ক্ষতির -
জানা নেই এই সাথীর -
এজন্য নিউটন-
করিয়া স্থির মন-
আদর করে তাকে,
নাম ধরে নিউটন ডাকে,
“ও ডায়মন্ড, ডায়মন্ড!
বুঝিবিনে এতক্ষণ” ,
হাত বুলিয়ে তার মাথায়-
জানিস না হেথায়
কী করেছিস ??
ভষ্মে সেরেছিস,
তুই শুধু- নিরীহ পশু-
তায় জানিস না আশু,
হয়ে অবুঝ মতি-
কী করেছিস মোর মহাক্ষতি !


মহাজ্ঞানী আইজ্যাক
চিন্তায় নির্বাক -
সদা থাকিতেন ,
প্রকৃতিকে মনে প্রণে মানিতেন -
অনেক কিছু জানিতেন-
নিজেকে অতি ছোট দেখাতেন ৷


একদা এক জ্ঞানী-
আইজ্যাককে মানি-
সুধায় তাঁকে-
কথার ফাঁকে-
শুধান, মহাশয় আপনি -
মহা জ্ঞানী-গুণী !
শ্রেষ্ঠ আসনে বিশ্বের সম্মুখে ,
মান্য করে আপনাকে লোকে ৷  
আপনি অতি মহান -
সকলে করে তব জয়গান ৷


আইজ্যাক মৃদু হেসে -
তাঁকে ভালবেশে-
সাধারণ ভাবে বলেন শেষে,
আমি অতি তুচ্ছ নগন্য-
বিশ্বে হই না মান্য-
এটা আমার নয় কাম্য-
শুধু শিখি আর পড়ি-
কুড়াই দু’চার নুড়ি-
আমি জীবন ভরি-
জ্ঞান সাগর তীরে ,
বেড়াই ঘুরে ঘুরে ৷


করি আদর রঙিন পাথর -
শুধু ক’টি করিয়া মুঠি-
নিচ্ছি শুধু তুলে,
যদি কিছু মেলে!!....


(ইং-১৬-১০-২০১৫ শুক্রবার)
“আই জ্যাক নিউটন” তাঁর জন্ম
দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ৷
(জন্মদিবস-ইং-০৪-০১-১৬৪৩)