ধারাবাহিক কাব্য, "ভাবনা", তার অংশ- পর্ব সংখ্যা- ১৫-১৬ ,- (২০১৫-মার্চ-এপ্রিল) ।


কিস্সা রোজভ্যালি-১৭


যত আপদ এই ‘রোজভ্যালি’
জ্বালায় ব্যাপক, ডেলি-ডেলি
কেলেঙ্কারী,  শোনে সকলি
কত অরি- দেয় হাততালি ,
কুৎসা প্রচার, মুখে বলাবলি !
মোর রাজপাট যায় জলাঞ্জলি ।


এদিকে বাংলার সরোবরে
যায় 'কমল’-পদ্মতে ভরে
অপরূপ শোভে পাপড়ি মেলি
আমি দেখি দু’নয়নে সকলি ৷
হেরি মৃণাল, ঐ কাঁটা-ফুল -
সে তীব্র মোরে ফোঁটায় হুল !
লোক বলে, আমি নাকি খেলি-
“রোজভ্যালিতে” জলকেলি ?
আমায়- ধরে চিন্তায়
কিচ্ছু আসে না মাথায় !
দোষটা যে করেই হোক-
পুরো এক সাথে থোক্ ,
কার ঘাড়ে যে চালি -
ঐ নষ্টের ‘রোজভ্যালি’,
জ্বালাচ্ছে খুব তীব্রতায়
আমি অশান্ত- দুশ্চিন্তায় !


কর্তা, এক আমার সাংসদ
সে ডেকে আনে আপদ ,
আমিও না জড়াই
খুব ভয়ে আছি তাই ।
প্রদেশে যা- চলিছে ঘুষ
হয়ে যাব একদিন ফুস !!


আস্থা-অস্ত্র-১৮


আমি আস্থার দেবী ভবানী !
ছেড়ে দেব না ভাবুনী ,
মৃত্যুঞ্জয় মত উপায় আছে
জাগ্রত আমার কাছে ।
মস্তবড়ো “আস্থা-অস্ত্র”-
সেই অমোঘ ব্রহ্মাস্ত্র ,
আস্থার সুস্সুড়ি মেরে
সহজে যাব উৎরে ।
উঠাইবো প্রতিক্রিয়ার বিড়া
আমি করিব পুনঃ জলক্রীড়া !
কেষ্টার সুরেলা বাঁশি শুনে
গোপীরা আবেশভরা - মনে ,
ধেয়ে আসিত ঘাটে চলে-
ঝাঁপিয়ে পড়িত অথই জলে !!


সেইমত আমি বাঁশি বাজাব
আস্থার বাজার রমরমা সাজাবো ,
জনতা টেনে, লোক ঝেঁটিয়ে-
শেষে,- ভাত, বিপুল ছড়িয়ে
লোক রূপ, কাক জুটাবো ,
ওদের মায়াজালে বাঁধিবো ৷
ক্ষণে করিবে, কাঁও-কাঁও ,
বলিবে আরো দাও, আরো দাও,
ঘিরিয়া আমার চারিপাশে
তারা উড়ে-উড়ে এসে বসে !


যেমন করে অনেক বাঁদর
একে অপরে দেয় আঁচড় ;
আমার দলেতে হালে
এরূপ আচার বহু মেলে !
নিজেরা করে আঁচড়া-আঁচড়ি
উপরে করে মারা-মারি ,
কাদা ছোড়া-ছুড়ি
আরো করে কাড়া-কাড়ি !
যার গায়ে ভীষণ জোর
করিয়া জোড়-তোড়
নিয়ে যায় অন্যের ঘরবাড়ি
নয়তো একে অপরকে ধরি
নেয় অকালে প্রাণ কাড়ি !
স্বহর্ষে, সবই চলিতে থাকে
মোর রাজত্বে, ফাঁকে-ফাঁকে !!


আমি যে ‘ভাবনা’
পরের বাড়াই যাতনা !
কালে- বাড়িলেও ভাবনা
তবু আমি কোনরূপ ভাবিনা ?
মায়ায় আস্থা-সাঁচে ফেলে
এ সব চলে বাঁশির চালে ।
কেন তারা সত্যটা দেখেনি !!
গণেশ কী দুধ খায় নি ?
ভরপুর দুধ গণেশ খেয়েছে ,
যারা স্বচোক্ষে দেখেছে
কত যে দু’কানে শুনেছে ,
তারা অবশ্য সবই মেনেছে !
জগতে রূপ ধরে আস্থা-মূর্ত
ঘটনা আজ এখানে চিরসত্য ,
কোনমতে অসত্য সম্ভব নয়
সর্বশেষ আস্থার হয় জয় !!
প্রবাদ- খতিয়ে দেখ- না
নেই বুঝি সে সত্য জানা ?
“বিশ্বাসে মিলায় বস্তু
তর্কে বহুদূর”,
সবারে আস্থায় ভরিব ভরপুর ৷
ঐ ভাবে সারিতে আস্থা
করে রেখেছি সব ব্যবস্থা ,
যখন হবে চরম অবস্থা !
ওদের ‘জান’করিব সস্তা ।


সবে ভাল বোঝে পাড়ায় ,
‘ভাবনা’ ক্রোধে রুখে দাঁড়ায় ।
যদিও করি সময়ে- দূরদূর -
তারা থাকে না ছেড়ে সুদূর !
এখন শুধু আস্থার সবুর ,
আমার কথা লাগিবে মধুর
ওরা যে আশাতে আতুর
লেজ নাড়িবে পুনঃ ভরপুর !


আমার চেলা বোধে কম !
বলে, ‘পুলিশকে মার বম’!
সে বেবোধের মত যে বলে-
শিশুসম রাখি তারে কোলে ;
পরে তার অপরাধ যাই ভুলে ,
তবু আস্থা যেন যায় জলে !
নিন্দা মেলে মোর কপালে ৷
তবু তারা থাকিবে হেথায়-
সসম্মানে, আমার মাথায় !!
                          ক্রমশঃ
*-রোজভ্যালি আর্থিক কেলেঙ্কারীতে এক সংসদের নাম জড়ায় ।
*-এক শাসক জনপ্রতিনিধি, পুলিসের উপর বম মারতে বলে ।