কেন আমার মনে হয় গ্রামের বিস্তীর্ণ সবুজ হলুদ সরষে ফুলের ক্ষেত,
একদিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে ঝাঁঝালো কালো কার্বন মনোক্সাইড এর স্পর্শে।
অ্যাসিড বৃষ্টি স্নাত মাটির সোঁদা গন্ধ চিরতরে মিলিয়ে যাবে কালের গর্ভে,
খানা খন্দ সিমেন্ট কংক্রিটের আস্তরণে ভরে যাবে চারিদিক।
জল ফড়িং, ঘাস ফড়িং এরা উড়ে যাবে ভেকেদের আর্তনাদের শব্দে।
গাংচিল হয়তো সেদিন ডাহুকের বাসায় আশ্রয় খুঁজে নেবে,
জীব জন্তু পশু পাখিদের জন্য তৈরী হবে কংক্রিটের আশ্রিত কারাগার।
"ঘাসের আগায় শিশির বিন্দু", পাকা ধানের গন্ধ আর পাওয়া যাবে না,
গাছের আড়ালে আবডালে প্রেমিকার শুদ্ধ চুম্বন যাদুঘরের দেওয়ালে আশ্রয় খুঁজে নেবে।
দরিদ্র অনাহারের সুন্দর তৈলচিত্র ফুটে উঠবে জীর্ণ পাঁচিলের গাত্রে,
বৃষ্টির ফোঁটায় শিল্পর রং তুলিতে আঁকা হবে প্রাণহীন শহরের মানচিত্র।
গ্রাম হয়ে উঠবে যান্ত্রিক শহর, ঘুরে বেড়াবে অসংখ্য মুখোশ পড়া মানুষ,
সেদিন মানুষের বুকে আশ্রয় নেবে কুকুর বিড়াল, নিলামে উঠবে মনুষ্যত্ব।
মলাট চিবিয়ে মুখস্থ করা বিদ্যার আড়ালে হয়তো বদলে যাবে মানুষের মন।
ধুলোয় ঢাকা লাল হলুদ পথ বদলে যাবে কালো পিচের আস্তরণে,
বড় বড় পুরাতন শহরের রাজপথ মিশে যাবে এই নব্য শহরের বুকে।
গ্রামের পঞ্চায়েতি রাজ অবলুপ্ত হয়ে প্রবর্তিত হবে নিগমের নাগরিক সভ্যতা,
শবদেহ মানুষের কাঁধে নয় হয়তো বয়ে নিয়ে যাবে সুসজ্জিত কাচের শকট।
ধবল মেঘের চামড়ে নদীর আঁকে বাঁকে ফুটে থাকা ফুল হারিয়ে যাবে,
গড়ে উঠবে ধূসর ধোঁয়াশার মাঝে বড় বড় শপিং মলের ইমারত।
আধুনিক ই-সভ্যতায় রুপালী পর্দার ক্যানভাসে হারিয়ে যাবে গ্রাম,
গ্রামের পূর্ণিমার চাঁদ সেদিন জ্যোৎস্না হারা হবে শহুরে বিশ্বায়নের আলোক রোশনাই।।