আবারো হয়ে গেলো মৃন্ময়ী মায়ের চিন্ময়ী রূপে আবাহন,
মা তোমার মহাশক্তির কাছে আমরা আশাবাদী মা, সব রীপু দূর করো।
শহরের বুকে পচনশীল প্রকৃতিতে ভেসে বেড়ানো মৃতের গন্ধ
বারুদের সাথে ধূপ ধুনার সুবাসে মিলিয়ে গেলো কয়েক দিনে।
তবুও ভোরের টলটলে শিশির কনায় অথবা কাশ ফুলের গোপন পাপড়িতে
হয়তো লেখা থাকবে এই ভয়াবহ মৃত্যু ব্যাধির ইতিহাস।
হয়তো আজ অনেকেই প্রশ্ন বানে জর্জরিত করছে মা তোমাকে,
তারা বাধ্য করে সর্বময় ক্ষমতার অধিষ্ঠাত্রী কে ফিরিয়ে দিতে স্বাভাবিক জীবনে।
তাই হয়তো মৃন্ময়ী দূর্গা রূপী মা ত্রস্ত বুকে আওড়াতে থাকে সৃষ্টি তত্ত্বের কথা।
হয়তো কালের অমোঘ চেতনায় এটাই ছিলো ভবিতব্য।
মাঝে মাঝে আমরা যে ভুলে যায় পৃথিবীর জ্যামিতিক ত্রিভুজটার কথা,
তাইতো পাপ পূণ্যের ভারসাম্য রোক্ষা করতে অসহায় হয়ে
নিঃশব্দে আমাদের সইতে হয় আপন জনের পুড়তে থাকা নিলয়ের কষ্ট,
ভোরের বাতাসে আগমনীর সুর মিশ্রিত কুহু তানে মিশে যায় হরিবোলের শব্দ।
জাগো তুমি মা দূর্গা দশ ভূজা, জাগো দশপ্রহরনি, জাগো, জাগো মা
ঈশ্বর রূপী মাগো, এই মৃত্যু করাল ব্যাধির হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো।
তুমি তো সবই জানো মা, সেই ব্যস্ত বিকেল গুলো চলে গেছে আজ শহর ছেড়ে,
তোমার আশিস্ পাওয়ার জন্য সেই জন জোয়ার আর নেই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে।
এখন ধোঁয়ায় ভরা জন শূন্যতায় নির্জনা এই কালোমাটির ভূখণ্ড।
গুটি কয়েক চেয়ার পাতা আর ঢাকির ঢাকের শব্দ শোনা যায়,
অদূর অদৃশ্য থেকে ভেসে আসে প্রিয়জনহারা কান্নার শব্দ।
রোগে আহত হয়ে ভীত সন্ত্রস তোমার সন্তানরা
জানেনা প্রিয় জন ফিরে পাওয়ার কোন দিশা।
জানেনা এই দুর্ভোগের হাত থেকে মুক্তির পথ।
জানেনা শরীরের কোষে কোষে কবেই বা তৈরী হবে প্রতিষেধক।
জানেনা কেমন করে মা কে ডাকলে পাওয়া যাবে সঠিক ঠিকানা।  
কুয়াশায় ঢাকা দিন গুলো যেন ঢাকের নাকুড়াকুড় বোলে
একদিন একদিন করে আয়ু রেখার সীমা ছাড়িয়ে চলে যাচ্ছে।
কেন জানিনা মনে হচ্ছে বিষন্নতার ছায়া ধরে সকলেই অদৃশ্য হয়ে যাবো,
কেন জানিনা মনে হচ্ছে এই করাল ব্যাধি থেকে ফেরার নেই কোন উপায়,
কেন জানিনা মনে হচ্ছে এই কীটতত্ত্ব মানুষের বোঝা অসাধ্য।
আজ অন্ধকারে চোখ বুঝলে স্বপ্নের ঘোরেও খুঁজতে থাকি ডাঙ্গা,
আর দিনের আলোয় চোখের মনি আয়নায় খুঁজে পায় মৃত প্রাণের প্রতিবিম্ব।
যাইহোক মায়ের অঞ্জলি তে হয়তো আশ্বিনের শ্বেত শুভ্র মেঘের ভেলায়
সব অশুভ ব্যাধি কেটে যাবে নতুন সূর্য দয়ের প্রভাতে ।।