সেদিন ট্রেনের কম্পার্টমেন্টে বসে জোনাক জ্বলা রাতে
আবছা কুয়াশায়; গুল্ম লতা ঢাকা স্টেশন টার ছবি মনে পড়ছিল।
নিয়ন আলোর জ্বলা নেভায় অস্পষ্ট ছিল স্টেশনের নামটা,
বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েকটা কুকুর এদিক ওদিক গা এলিয়ে শুয়ে ছিল।
একটা বিড়াল ইঁদুর ধরার চেষ্টায় ছোটাছুটি করছিল এখানে ওখানে,
চায়ের দোকান টাও ক্রেতা শূন্য মিটিমিটি আলোয় কোলাহল মুক্ত।
ফেরিওয়ালাদের দৌরাত্ম্য চোখে না পড়ার মতোই নিশ্চুপ হয়ে গেছে।
স্টেশন চত্বরটা পাড় করে কয়েকটা ঝুপড়ি থেকে বেরিয়ে আসছে
শ্বাস রুদ্ধ, চোখ জ্বালা করা শ্বেত শুভ্র ভূম্রের কুণ্ডলী।
বিশ্রামাগারের বেঞ্চের একটা কোনে অপেক্ষারত নব দম্পতি
আনমনে করে চলেছে খুনসুটি গায়ে জড়ানো চাদরের তলায়,
সোয়ামীর কাঁধে মাথা রেখে প্রেমালাপে নিমগ্ন।
একটা পাগল, হ্যাঁ পাগলেরই মতো উদাস মনে বসে আছে,
চাঁপা ফুলের গাছটার গোড়ায় কাঠের বেঞ্চটার উপর,
হয়তো সব হারিয়ে সে নিঃস্ব, অভিমানী উপবাসী।
অপর প্রান্তে সবুজ সিগন্যালের আলোয় ছুটে আসে দ্রুতগামী এক্সপ্রেস,
হুইসেলের আওয়াজ ক্ষীণ থেকে তীব্র হয়ে  ক্রমে ক্ষীণতর হয়ে মিলিয়ে যায়।
হঠাৎই যাত্রীদের ঘুম ভেঙে শুরু হয়  সোরগোল,
কেন দাঁড়িয়ে আমরা? ট্রেন কেন চলছে না? কোথায় ট্রেন এখন?
কখন হল? কখন ছাড়বে? নানান প্রশ্ন আর কটুক্তির সম্মুখীন।
সবাই ঘুমন্ত চোখে হতবাক চিত্তে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে,
আমি নিরুপায় এত প্রশ্নের সদুত্তর আমার জানা নেই।
তাই সব অগ্রাহ্য করে নিজের শয্যা যাপন করলাম,
মুহুর্তেই গাড়ির দুলুনিতে আবার চলা শুরু হল গন্তব্য হীন পথে।।