আশ্বিনের আকাশে ভাঙা ভাঙা সাদা মেঘের ভেলা
দূরে সজ্জিত নির্বিকার একটা ভাঙা কাঠের সেতু।
কতবার দুজনে হাতে হাত রেখে গল্প করতে করতে
খুব সাবধানে পেরিয়ে গেছি খালটার এপার ওপার।
হিমেল বাতাসে হঠাৎই ঝরে পড়া বৃষ্টি
দুজনকে ভিজিয়ে দিয়ে গেছে পুরোমাত্রায়,
দুজনে অপলক চোখাচোখি ছেঁড়া সিক ভাঙা ছাতার নীচে
বৃষ্টি ভেজা মেঠো গন্ধে হারিয়ে গেছি আনমনে।
আচমকাই বিদ্যুৎ আর মেঘের গর্জনে কখন যে
দৃষ্টি সরিয়ে তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলে বুঝিনি।
ভয় মিশ্রিত কম্পিত শরীর কিছু বলার আগেই
ছুঁয়ে দিয়েছিল তোমার কোমল ঠোঁট যুগল,
অনুভব করেছিলাম ভালোবাসার প্রথম চুম্বনের স্বাদ।
শান্ত হয়েছিল প্রকৃতি, ছড়িয়ে পড়েছিল সুরের মূর্ছনা,
ফুলের সুগন্ধে সুবাসিত হয়েছিল বৃষ্টি স্নাত পৃথিবী।
আজ নিঝুম রাতে খোলা জানালা দিয়ে দেখা যায়
কোজাগরীর পূর্ণিমার সেই শান্ত গোল চাঁদ টাকে।
ঘরের দেয়ালে কাঠের ক্যানভাসে ঝুলে আছে
সেদিনের সযত্নে আঁকা পেনসিলের স্কেচটা,
আজও তাতে বিন্দু মাত্র লাগেনি রঙ তুলির ছিটে ফোঁটা।
শুধু আঁখিপটে বারংবার ভেসে ওঠে সেই লজ্জা মিশ্রিত
হাসি মাখা মুখ খানা।
কেন আসো বারবার সেই স্বপ্নীল স্মৃতি নিয়ে?
কেন প্রতিরাতে অপেক্ষার হাতছানি দিয়ে ডাকো?
কেন কিছু বলার জন্য বলা হয় না কোন কিছুই?
কেন তুমি ছায়া হয়ে আমায় ঘিরে রাখো?
তুমি কি বোঝ না আমার লুকিয়ে থাকা হৃদয়ের যন্ত্রণা?
জানিনা নীরব রাতের ভালোবাসা কোনদিন
সকালের সোনালী রোদ্দুর হয়ে উঠবে কিনা!
জানি শুধু ভালোবাসা মানে অজানা কষ্ট
তাই নীরবে খুঁজবো তোমায় ভোরের শিশিরে,
খুঁজবো তোমায় সমুদ্রের গভীর অতলান্তে,
খুঁজবো তোমায় সবুজ বনে পাখিদের কলতানে,
খুঁজবো তোমায় জ্যোৎস্না মাখা কোজাগরী আকাশে তারাদের ভীড়ে,
খুঁজবো হ্যাঁ খুঁজবো তোমায় চিরকাল আমার মনের মাঝে।।