বিজয়া, বিজয়া তুমি কি এখনও রমনায় যাও
বকুলতলা সোহরাওয়ার্দীতে যাবার সময় পাও?
গতকাল গিয়েছিলাম সেইসব জায়গাগুলোতে
শরৎ হেমন্ত ও বসন্তের শুক্লপক্ষ সন্ধ্যা রাতে
আরোও অনেক অনেক সময় বিজনে নির্জনে
তুমি আর আমি গল্প করতাম বসে যেখানে
দেখলাম সেই জায়গাগুলো আগের মতোই আছে।


তুমি আমার আবৃত্তি বেশী পছন্দ করতে
আমি তোমার পছন্দমত আবৃত্তি করতাম,
জীবনানন্দ সামসুর রুদ্র জয় গোস্বামী এবং
সুনীলের কবিতাই ছিলো তোমার বেশী পছন্দ
আবৃত্তিতে তোমাকে খুশী করা ছিলো আমার আনন্দ।


আমি শুক্লপক্ষের কোনো এক সন্ধ্যা রাতে
বত্রিশটি কবিতা আবৃত্তি করেছিলাম একে একে,
তুমি আমার মুখপানে চেয়েছিলে বিস্ময়ের সাথে
শেষে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলে তোমার দুই হাতে,
তোমার বুকে আমি পেয়েছিলাম বকুল ফুলের গন্ধ
তোমার ভালোবাসায় আমি হয়েছিলাম অন্ধ।


২০০১ সনে পহেলা বৈশাখ ভোরে গেলাম রমনা
বটমূলে ছায়ানটের অনষ্ঠানে হলো বোমা হামলা।
সেদিনের সেই ভয়াল বোমা হামলায়
তোমাকে বাঁচাতে নিজ থেকে আমার দায়িত্ব বর্তায়।


আমরা বেঁচে গেলাম ভাগ্য-বসত
তুমি সম্পূর্ন অক্ষত, আমি চোখে আহত,
এজন্য আমাকে বহুদিন হাসপাতালে থাকতে হয়
এবং হাসপাতালেই আমার একটি চোখের আলো
চীরদিনের জন্য নিভে যায়।
আমার কপাল ভালো
আরেকটি চোখ তবুওতো রক্ষা পেলো।


এরপর তোমার সাথে আমার আর দেখা হয়নি
আমার ছিলো অভিমান, জানিনা তোমার কি কারণ,
এইতো কিছু দিন আগে নিশ্চিত জানলাম-
তোমার বিয়ে হয়ে গেছে
এবং তোমার জীবন খুব খুশীতে কাটছে,
হা, তোমার খুশীতে আমিও খুশী এই পরবাসে।


বিজয়া, বিজয়া আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে-
এখনও কি তোমার বুক থেকে বকুল ফুলের গন্ধ আসে
যে গন্ধ আমার স্নায়ুতন্ত্রে এখনো লেগে আছে।


.