( 'পথের পাঁচালি" ছায়াছবির একটি বিশেষ দৃশ্য অবলম্বনে রচিত । )


কু ঝিক্ ঝিক্ রেলের গাড়ি
     লোহার পাতে ওই যে ছুটে যায়,
উড়ছে ধোঁয়া কালো কালো---
     কে গো ওরা অবাক চোখে চায় ?


দিকে দিকে কাশের মাথা
      ওই, দুলে দুলে নাচে গো ;
আহা, এমন মধুর দৃশ্যটি
     কোথায় বা আর আছে গো ?
দিদির নাকে পাথর জ্বলে,
      ভাই-এর মাথায় মুকুট ।
চোরকাঁটাতে ভরলো কাপড়--
       দে রে ছুট্, দে রে ছুট্   ।
কার জমিতে আখের চাষ--
      কে বা তার হিসাব রাখে ?
একটি দু'টি ভেঙে নাহয়
      চিবিয়ে দাঁতে মিষ্টি চাখে  ।
ও কি ও-- কিসের আওয়াজ ?
      ভেবে না পায় কূল গো--
তারের ভিতর যায় কথা ?
      ভাঙ্গে না ওদের ভুল গো ।


বকনা রে তুই হারিয়ে গিয়ে
       সুযোগ দিলি বিশ্ব জানার ;
জুটলো না হয় মা-র থাপ্পড়--
       জানলো পাখি স্বাদটি ডানা-র  ।


দেখতে কেন পারিনে হায়
        ওদের মতো চক্ষু মেলে !
কাশ, রেল, আখ সবই আছে--
        পা বাড়িয়ে একটু গেলে  ।
জানার ভিতর অজানারে
        মোরা করিনে আর সন্ধান ;
সময় কি আর আছে মোদের--
        অবাক হয়ে পাতবো কান  ।
ইচ্ছে তো হয় যখন তখন
         আখ ভাঙি আর কাদা ঘাঁটি ;
হারিয়ে গিয়ে একটি দিন--
          দেখি, শাপলা-ডিঙি-মাটি ।
তুলসী-মাচা-ঘোমটা-নোলক
          লাউ-ঝিঙ্গে-শিউলি-বক
ঘাট-কলসি-আলতা-সাঁতার
          গোয়াল-মরাই-চচ্চড়ি-টক ।


এগুলো সব এখনও আছে, আছেই--
           নাইগো অবাক চোখের ক্ষুধা ;
অপু-দূর্গা, দে না তোদের চোখগুলো--
           গ্রহণ করি, ধরণীর সকল সুধা ।