সকাল থেকে ভারী বর্ষণ রাস্তা-ঘাট জল থৈ-থৈ
অফিসে যে যাবো তার কোনও উপায় নেই
আমি বললাম, অপর্ণা কিছু মনে করো না
আজ আমার অফিস কামাই।


গিন্নির মুখ ঝামটা, তোমার ওই এক বাই
কিছু হলো তো, অফিস কামাই  
আজ বৃষ্টি, অফিস কামাই
কাল অবরোধ, অফিস কামাই
পরশু মন ভালো নেই, অফিস কামাই
মাসের শেষে যে কটা টাকা পাও
তুলে দিয়েই খালাস, সংসার তুমি একা সামলাও-


বাইরের আকাশ কালো মেঘে ভারী
যেন এখনি নেমে আসবে ছাদের উপর  
শোঁ শোঁ ঝড়ো হাওয়ায় জানলার কপাট
হাট করে খুলে যায়। ভিজে বাতাস ঝাপটা মারে মুখে।  
ছেলে ছুটে আসে, “বাবা তুমি করছোটা কী  
দেখছো না ঝিরঝির বৃষ্টি , চলো না টেম্পল রান টা খেলি”।  
আমি বলি, “তার চেয়ে বরং চল না কাগজের নৌকা ভাসাই বৃষ্টির জলে”।
- “রাস্তার জল টু মাচ পলুটেড, ভেরী ডাটি, গেছে তোমার মাথাটি
ডাক্তার দেখাও”। বউ বলে, “তোমার যত ছেলে খেলা আর পারিনা”।


ছেলের হাতে রঙিন ছাতা  
আমি বুড়ো খোকা, কাগজের নৌকা ভাসাই রাস্তার জলে
কিছুদূর ভেসে পাক খেতে খেতে জল-কাদায় মিশে
ডুবে যায় খোলা ম্যানহোলে।
ছেলে বলে, তুমি কিচ্ছু পারো না
ভালো করে পেপার বোটও বানাতে জানো না।
কালকে দেখ অ্যান্টিকে দিয়ে এত্ত বড় বোট বানাবো
বে–অফ-বেঙ্গল দিয়ে ভেসে অতলান্তিক ওশানে যাবে মিশে।


আমি ওর নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি।  
ভেজা হাওয়ায় চশমার কাঁচে বিন্দু বিন্দু জল জমে
কখন যেন এক সমুদ্র । তারই বুকে দেখি বিশাল এক
কাগজের নৌকো। দুলতে দুলতে, দুলতে দুলতে অসীম পারাবারে মিশে যায়।