‘সময়’ একজীবনে আমাকে শুধু ‌তার পিঠই দেখালো,
মুখ দেখালো না কখনো!
তাইতো সারাজীবন ধরে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া
একটি দুটি আধুলি পকেটে ভরেই
সময়ের মুখ দেখার জুয়া খেলার টেবিলে বসে পড়ি
এক আনাড়ি জুয়ারীর মতো।
অপরিচিত নির্বোধের মুখোশ পরে আমি বারবার হেরে যাই সেই জুয়ায়,
-শুধু একটি আস্ত নোটের অভাবে।
তাইতো সারাদিন
আমি একা একা
এই ঢাকা শহরে উড়ে বেড়াই
এক মনমরা চড়ুই পাখি হয়ে।
অবসন্ন হয়ে একসময় গভীর রাতে প্রতিবারই
তোমার দোতলা ঘরের জানালায় বসে থাকি।
আসলে বিশ্রামের ছলনায়
আমি জুয়ায় হেরে
প্রতিরাতে বিলাপ করতে বসি
শেষ আধুলিটির জন্য তোমারই জানালায়।
আমার এই বিলাপের জল কাঁচের জানালা পার হয়ে
কখনোই তোমার ঘরে ঢুকতে পারেনা।
ঢাকা শহরের জোনাকিরা শুধু শুধু আমার বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়ে
তোমার কান ভারী করে,
একটি আধুলির জন্য প্রতি রাতে আমার এই বিলাপ বিলাপ খেলা
নাকি এক মিথ্যা বাহানা,
এক আদিম পৌরাণিক কাহিনী!
শহরের জোনাকিদের বিশ্বাস
আমার এই বিলাপের জল
একদিন গভীর ঘুমের মাঝে
তোমার শরীরের সমস্ত বিপদসীমা অতিক্রম করে
তোমাকেই দুঃখী করে দিবে তোমার ‌অজান্তে।
সারা জীবন যার রাস্তায় আধুলি কুড়িয়ে অভ্যাস
সে থোরাই কেয়ার করে শহরের মিথ্যুক জোনাকিদের গুজব।
তাইতো সময়ের মুখ দেখার জুয়া খেলায় বারবার হেরেও
জেদী জুয়ারীর মতো পকেটের শেষ সম্বল আধুলিটি নিয়ে
ভুল করে বসে পড়ি কোন এক পাকা জুয়ারীর সাথে,
যার পকেটে সব সময় ভর্তি থাকে  আস্ত নোটে।
‌অঘুমের নির্জন কোন রাতের বেলায় জানালা খুললেই
তুমি জোনাকির আলোতে ঠিক দেখতে পাবে,
সেইখানে বসে আছে
একটি মনমরা চড়ুই পাখি
আর একটি আধুলি।
চড়ুইটি তার শেষ সম্বল সেই আধুলিটি নিয়ে
জুয়ার টেবিল থেকে আজও পালিয়ে এসেছে
তোমারই জানালায়,
শুধু সময়ের মুখ একবার দেখবে বলে!
———————————
র শি দ  হা রু ন
১৬/০১/২০২১