নির্জনে বসে একা একা
আমি কাঁদি,
আমি কাঁদি
আমারই জন্য।
আমার কোনো বন্ধু নেই
আহারে আমার কোনো বন্ধু নেই
এই ঢাকা শহরে।


বিশাল এই শহরে বন্ধুহীন আমি তাই
নিঃসঙ্গতার জ্বরে ভুগি,
বুকের অসুখে ছটফট করে ‌অঘুমে সাঁতরাই সারারাত।
অকোমল এই ঢাকা শহরে আমি বন্ধু হতে যার কাছে‌ই হাত পাতি,
আমার একলা হাতে ধরিয়ে দেয় ভিন্ন ভিন্ন বিষাদের  চিঠি।


প্রতিদিন দুপুরে আয়না হতে নিজেকে টেনে বের করি।
বন্ধুর মতো নিজেকেই নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি প্রতিদিন সখাহীন এই শহরে।
রঙের শহরে হাঁটতে হাঁটতে ‘জাল সুখ’ কিনে ভরে ফেলি ক্ষুধার্ত বুক পকেট।


‘চোখে সুখ লাগা’ দোকান হতে কতো কিছু যে কিনি!
থরে থরে সাঁজিয়ে রাখি তাদের বুকের শূন্য আলমারিতে--
চন্দন কাঠে ফুল তোলা এক বাক্স রঙিন সংসার,
চীনামাটির একটি নীল গাভীন গাই,
লাল রঙের কিছু হাওয়াই মিঠাই,
শীতল জলে ভরা একটি পুকুরের গল্পকথা,
কালোবাজারে কেনা দুটি সিনেমার টিকিট,
স্বচ্ছ কাঁচের জারে আটকানো কিছু সোনালী জোনাকি পোকা।
আরো কতো কী,
খুলেও দেখা হয়নি কখনো অনেক রঙিন প্যাকেট!


আলো মরে যাওয়ার পর
প্রতিদিন মহল্লার ফুটপাতে বসে চা সিগারেট খেতে খেতে নিজের সাথেই আড্ডায় ফালতু গল্প করি।
মাস্তি মজায় খিস্তি দিয়ে গালি দেই নিজেকে,
বিদ্রুপ করি আমাকেই বারবার বন্ধুহীন বলে।
বুকের আলমারির ‘জাল সুখ’ ফুটপাতে ঢেলে দিয়ে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হাহাকারে কেঁদে উঠি চিৎকার করে।


রাত হলেই আমাকেই নিয়ে ঢুকে যাই মহল্লার সরকারি কবরস্থানে।
বন্ধুর মতো নিজেকেই বুকে জড়িয়ে ধরে শোকের মাটিতে বসে মাতম করি হিয়াহীন এই শহরে একজন বন্ধু জন্য।


বাড়িতে ফিরেও নির্জনে বসে
আমি কাঁদি
আর চিঠি লিখি চোখের জলে লাল রঙ মিশিয়ে,
‘বন্ধু তুই কেমন আছিস?”
তারপর প্রাপকের জায়গায় নিজেরই ঠিকানা লিখে ডাকবাক্সে ফেলে আসি প্রতিদিন।
--------
র শি দ  হা রু ন
২৬/০৭/২০২১