মনোলীনা,
অনেকদিন পর চিঠি লিখতে বসেছি তোমার কাছে।
এতদিন লুকিয়ে ছিলাম ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে এক অন্ধকার গুহার ভিতরে;
শুধু ঘুম আর ঘুম।


ঘরের বাইরে কত ঝড় বৃষ্টি হয়েছে এতদিনে তার হিসেবও রাখিনি,
শুধু টের পেতাম বুকের ভিতরে কালো মেঘের আনাগোনা বাড়ছে।


ক্ষিধে পেলে জমানো চোখের জলে পেট ভরাতাম।
প্রাপক না পেয়ে বিষণ্ন ডাকপিয়নের বুকের হাহাকারের শব্দ দরজার নিচ দিয়ে মাঝে মাঝে কানে ভেসে আসত।
দরজার বাহিরে বন্ধুবান্ধব ডাকতে ডাকতে ক্লান্ত আর হতাশ হয়ে বারবার ফিরে যেত।


আমি চুপচাপ বালিশে মুখ চেপে বসে থাকতাম,
কেউ যেনো আমাকে খুঁজে না পায়।
একসময়  আবারও ঘুমিয়ে পরতাম।


একদিন ঘুমের মাঝে ধবধবে সাদা শাড়ি পরে  মা এসে হাজির আমার বদ্ধ ঘরে।
আমার মাথায় নরম করে  হাত রেখে বললো,
“বাবারে এভাবে লুকিয়ে থাকলেই কি বেঁচে যাবি?
সবারই মা মারা যায়,
মরে গিয়েও আমিতো সারাজীবন তোরই সাথে আছি।
তোর জমানো চোখের জলও তো প্রায় শেষ,
কী খেয়ে বাঁচবি আর?
দরজা খুলে দেখ,
তোর বেঁচে থাকার অনেক চিঠি জমেছে।"


মনোলীনা,
অনেকদিন পর দরজা জানালা খুলে অন্ধকার গুহা থেকে বের হলাম,
তীব্র আলোতে চোখ খানিকটা পুড়ে যেতে বসেছিল!
তোমার অনেক চিঠি জমে আছে,
খুলে দেখা হয়নি এখনো।
তাইতো তোমাকে লিখতে বসেছি,
নতুন করে জানান দেবার জন্য
“ আমি এখনো বেঁচে আছি,
আবারো আয়না দেখা শুরু করেছি,
চোখে নতুন করে আবার জল জমতে শুরু করেছে।
মনে রেখ,
মা মারা গেলেও
  মানুষরা বেঁচে থাকে
বুকের ভিতরে কালো মেঘ জমিয়ে জমিয়ে।
—————
০৪/০৬/২০২২
র শি দ  হা রু ন