আমার বেঁচে থাকার গল্পটা মনে পড়ল ঠিক মরনের পরপরই ।


মনে পড়ল,
মরনের সময়
এক টুকরো মেঘ ছিল আমার হাতে।
শরীর জুড়ে হচ্ছিলো তুমুল বৃষ্টি ।
ঠিক সেই সময় গোরস্থানের বাঁশঝাড়ের মাথায়  ঘুমাচ্ছিল একটা সাদা বক।


মনে পড়ল,
মাটির সানকিতে সাদা সাদা মুক্তোর মতো গরম ভাতের উপর এক টুকরো পদ্মার ইলিশের ঘ্রান নাকে টানছিলো খুব।


একটা ‘ঘরে না ফেরার অসুখ’ বসে ছিল বন্ধুর মতো কাঁধে হাত রেখে ।
আর বাঁশঝাড়ের নিচে সাড়ে তিন হাত জমিতে ডাকছিল শোকের কিছু ঘাস ।


মনে পড়ল,
বাবার কবরের একমুঠো মাটি শরীরে মেখে মাঝ নদীতে সাঁতার কাটতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল ।
আর তখনই মায়ের স্পষ্ট কন্ঠ শুনতে পেয়েছিলাম, “সন্ধ্যার আগে ঘরে ফিরিসরে বাবা।"


মনে পড়ল,
প্রিয়তমা স্ত্রীর কাছে একটা দীর্ঘ প্রেমপত্র লিখতে বুক জুড়ে বাঁশ পাতার আর্তনাদ দাপড়াচ্ছিলো।
আবার প্রিয় সন্তানদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে বুকটা উথাল পাতাল কাঁপছিলো।


মনে পড়ল,
গোরস্থানের মুর্দাগণ নবীন বরনের জন্য আনন্দ উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।


একসময় টের পেলাম মরে যাওয়া মানুষের বুক থেকে মিশে যায়
-কিছু ‘বিষন্ন বিলাপ’
সাড়ে তিন হাত মাটিতে
কিছু নবীন ঘাসের সাথে।


তারপর আমার মরন হলো।
————————————
রশিদ হারুন
০৫/০৪/২০২০