একদিন একজন নারী আমাকে বলেছিলো
-“কবি আপনি কি জানেন?
ঘরেরও আত্মা আছে
ঘরও বিষণ্ণ হয়!
একটি বিষণ্ন ঘর আপনাকেও বিষণ্ণ করে রাখবে আপনার অনুমতি ছাড়াই,
আরও জানেন কি?
ঘর কিন্তু স্বার্থপরও হয়!
স্বার্থপর ঘর নিজে ভালো না থাকলে,
অন্যকে কি ভালো থাকতে দেয়?


কবি, আমি বাজি ধরে বলতে পারি-
একাকী একটি বিষণ্ণ ঘরে দীর্ঘ রাতে
আপনি বিষণ্ণ হয়ে যাবেনই যাবেন।
সেই বিষণ্ণতায় রাতের মধ্যেই আপনার চোখ পুড়ে যাবে দীর্ঘ অঘুমে।
আপনার বুকের মধ্যে একবার যদি বিষণ্ণতা ঢুকতে পারে
তবে সেটি বুকের ভিতর থেকে মস্তবড় তালা ঝুলিয়ে দিবে।
বুকের বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখবে আপনার সমস্ত সুখ,
আর ‌অপেক্ষমাণ কিছু কবিতার শব্দ।
যতো তাড়াতাড়ি পারেন
- আপনার একাকী বিষণ্ণ ঘরের চিকিৎসা করুন।”


তারপর থেকেই,
প্রতিদিন ভোরবেলা সূর্য উঠার প্রথম আলোতে একাকী বারান্দায় বসে রাস্তায় তাকালেই দেখি
একটি সাদা কাঁচের কফিন বয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেই নারীটি।
কফিনের ভিতর সাদা কাফনে মোড়ানো থাকে
একটি দীর্ঘ রাতের বিছানায় পড়ে থাকা আমার মৃত ঘুম,
অঘুমে পোড়া একজোড়া চোখ,
এখনো হাহাকারের ধোঁয়া উঠা একজোড়া জ্বলন্ত ঠোঁট,
মস্তবড় তালা আটকানো বিষণ্নতায় ঠাসা আমার বুক,
আর এখনো লিখতে না পারা আমার কবিতার ঝরে যাওয়া কিছু শব্দ।


একজন ঘুমের ডাক্তার আমাকে বলেছেন-
“কবি,
আপনার এই অসুখের কোন ঔষুধ আমার জানা নে‌ই।
তবে অভিজ্ঞতায় কারনে এতোটুকু জানি,
যে সকল পুরুষ কবিগণ
কখনো কোনো নারীর কাছ থেকে বিষণ্ণতার গল্প একদিনও যদি শুনে থাকেন,
তাহলে তাদের সবারই কোনো না কোনো একসময়
এই অঘুমের অসুখ হবেই হবে।
তবে কোন পুরুষ যদি একই কথা কোন নারী কবিকে বলে,
নারী কবিগনের ক্ষেত্রে এই অসুখে ধরবে কদাচিৎ।”
—————————
র শি দ  হা রু ন
০৭/১২/২০২০