মধ্যরাতে ঢলঢলে ভাসা চাঁদের আলোতে-
সংসারী ছায়াপড়া জীবন খুঁজতে গিয়ে,
যেদিন থেকে ঢাকা
শহরের সব অলি-গলির
রাতের সব ল্যাম্পপোষ্টের সব বাতি
আমি খুন  করিয়েছি গোপন আততায়ী দিয়ে।
সেদিন থেকেই দোষ লেগেছে আমার সংসারী গোছালো জীবনে।


গোছালো জীবন এখন আর আমার বুকে ধরে না।


দোষ লেগেছে,
দোষ লেগেছে-
রেশনের লাইনে দাড়িয়ে চাল ডালের কথা ভুলে-আমি বৃষ্টির ফোঁটা ব্যাগে ভরি।
চলন্ত রিকশা থেকে লাফ দিয়ে নেমে যাই মতিঝিলের শাপলা চত্বরে-
একটু জলে ভিজবো বলে।
দোয়েল চত্বরে হা করে বসে থাকি
সারাদিন -
দোয়েল উড়বে কখন সেই আশাতে।


দোষ লেগেছে,
দোষ লেগেছে-
আমি ব্যস্ত রাস্তায় যখন তখন শুয়ে পড়ে আকাশ দেখি।
আমি ট্রাফিক সিগন্যালে ভিখারীর সাথে দাড়িয়ে পাল্লা দিয়ে ভিক্ষা করি।
আমি বাড়ির ঠিকানা ভুলে গোরস্থানে রাত কাটাই।
আমি সাম্যবাদীদের মিছিলের শ্লোগান শুনে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ি-
তারপর প্রচন্ড মার খেয়ে রাস্তায় পড়ে থাকি।


আমি রাস্তা পার হতে গিয়ে হঠাৎ
কোনো চলন্ত নারীর চোখে হাহাকার  দেখে মাঝ রাস্তায় দাড়িয়ে থাকি অনন্তকাল-
পুরো শহর ‌অচল করে দেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য।


দোষ লেগেছে,
দোষ লেগেছে-
গভীর রাতে ছেলেধরা চাঁদের মন ভুলানো ফকফকা আলোতে-
গোছালো আর অগোছালো জীবনের মীমাংসায়
দৌড়াতে দৌড়াতে যখন শহরের দরজা খুলে যখন বের হয়ে আসি-
হেসে উঠি চিৎকার করে ঢাকা শহরকে ভয় দেখিয়ে।


বলে উঠি আমার বুকের ভিতরে-
“ যার বুকে জন্ম থেকে সন্ন্যাস ঘর বেঁধেছে-
সে কেমনে ছিলো এতোদিন এই গোছালো সংসারী জীবনে,
এতোদিন সে কেমনে ছিলো!!
আমি আর কখনোই ফিরবোনা এই শহরে”।
————————————
রশিদ হারুন
০৭/১২/২০১৯