এই শহরের লাজুক মানুষরা,
তোমরা তোমাদের ঘরের দরজা-জানালা আটকে অন্ধকারে শুয়ে থাকো আরো কিছুদিন।
যাতে করে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে তোমাদের বুকে আর মাথায় পা দিয়ে মাড়িয়ে হেঁটে যেতে পারে কিছু ধূর্ত শেয়াল  
আর তাদের প্রভু প্রতিপালক।
এই প্রতিপালকরা রঙবেরঙের ক্ষমতার পোষাক পড়া এই শহরের কিছু তথাকথিত দেবদূত।
লাজুক মানুষরা তোমরা অনেক লাজুক
তাইতো তোমরা বদ্ধ ঘরে অপেক্ষায় আছো
কখন এই দেবদূতরা নিতান্তই মস্করা করে ‘ফায়ার! ফায়ার!’ বলে
যেনো তোমাদের শরীর থেকে কিছু রক্ত বের করে দেখতে পারে
তোমাদের রক্তের রঙ- লাল না নীল।
এই শহরের লাজুক মানুষরা তোমরা কিন্তু শুয়েই থেকো,
নড়াচড়া করো না
তোমরাই পারবে ‌অন্ধকারে নির্জীব ভাবে শুয়ে থাকতে।
দাঁতে দাঁত কামড়িয়ে এই অপমান এই কষ্ট সহ্য ‌করা তোমাদের অভ্যাস হয়ে গ্যাছে।
তবুও তোমরা শুধু সাবধানে থেকো
তোমাদের শরীরের একচিলতে ছায়াও
যেন ভুল করে দরজা জানালার ফাঁকফোকর দিয়ে  ঘর থেকে বের না হয়ে পড়ে।
তাহলে এই শহরের শিশুরা তোমাদের নিয়ে হাসাহাসি করবে,
করুনা করবে তোমাদের এই লাজুক ভাবে বেঁচে থাকা নিয়ে।
এই শহরের লাজুক মানুষগণ,
এভাবে ‌অন্ধকারে থাকতে থাকতে তোমাদের শরীরে  একদিন বটগাছের মতো পরগাছা জন্মাবে,
তারপর সেই পরগাছা থেকে বের হবে অগণ্য লজ্জিত বটের ঝুল।
লাজুক মানুষরা,
তোমাদের শরীরের পরগাছার ঝুল বাড়তে বাড়তে
একেবারে তোমাদের মগজের গভীরে চলে যাবে একদিন,
তখন ইচ্ছে করলেও কখনোই তোমরা
আর বদ্ধ ঘর থেকে বের হয়ে আলো বাতাস স্পর্শ করতে পারবে না।
এই শহরের লাজুক মানুষগণ,
দরজার বাইরে থেকে যদি কোনো একদিন শিশুরা তোমাদের ডাকে,
তোমাদের দোহাই দিচ্ছি
তোমরা তাদের কোনো লজ্জার হাওয়া ভরা রঙিন বেলুন দিওনা।
খেতে দিয়োনা তোমাদের অপমান ভরা লাল রঙের কাঠি লজেন্স।
যদি পারো
পুরোপুরি বটগাছ হয়ে যাবার আগে
তোমাদের লাজুক বুক থেকে চিৎকার করে
একটি শব্দ দিও তাদের
আর তা হলো ‘প্রতিবাদ’।
সেদিন দেখবে বদ্ধ দরজার নিচ দিয়েও
তোমাদের ‌অন্ধকার ঘরে সূর্যের আলো ঢুকছে,
একেবারে আনকোরা ঝকঝকে সূর্যের আলো।
——————————
র শি দ হা রু ন
১৬/০৮/২০২০