“কেমন আছো?!
ভালো থেকো “


এই ছিলো তোমার প্রথম  ও শেষ
জানতে চাওয়া  আমাকে,
এই ছিলো তোমার প্রথম  ও শেষ
প্রার্থনা আমার জন্য।


মনোলীনা,  
এই ছিলো তোমার লেখা আমার জন্য  
দু'লাইনের একমাত্র  চিঠি।
গরম গরম চিঠি বুকের মধ্যে আঁকড়ে ধরে
আমি ভাবলাম জীবনের মানে পেয়ে গেছি,
আমি ভাবলাম পৃথিবীর সব সুখ এখন পকেটে।


তারপর মুহূর্ত এর মধ্যে অহংকারী হয়ে গেলাম,
বেকার মানুষ,
তবুও দু’টাকার চা খেয়ে
দশ টাকা বখশিশ দিয়ে দিলাম,
একটা গোল্ডলীফ সিগারেট এর বদলে
আস্ত এক প্যাকেট ব্যানসন কিনে ফেললাম,
জ্বলন্ত সিগারেট ঠোঁটে পায়ের উপর পা রেখে
রিকশার উপর বসে সারা শহর ঘুরি,
আর প্রতিটি মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবি
সবাই কত অসুখী, সবাই কত অভাগা,
কারো পকেটে মনোলীনার চিঠি নেই
একমাত্র আমার কাছে আছে
কোহিনূর হীরার চেয়েও মূল্যবান সম্পদ,
সবার জন্য করুণা হয়।


তারপর একসময় ভয় পেয়ে যাই,
প্রকাশ্যে এই চিঠির নিরাপত্তা দেবার
যোগ্যতা আমার নেই,
যদি ছিনতাইকারী আমাকে অপহরণ করে
তোমার চিঠির জন্য,
মুক্তিপনের জন্য কাউকে বলতে
আমার অহং বাধা দিবে।


যদি রাষ্ট্র আমাকে নির্দেশ দেয়
এই সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে,
আমি তত ক্ষমতাধর মানুষ নই,
আমাকে অবশ্যই  তাহলে তোমার চিঠি
সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে।


মনোলীনা,
আমি তারপর ভয়ে তোমার চিঠি সহ
আত্মগোপনে চলে গিয়ে ছিলাম,
ভেবে ছিলাম সব স্বাভাবিক হলে
আমি ও লিখবো
“আমি ভালো আছি, তুমি ভালো থেকো “।


মনোলীনা,
বেকার মানুষদের আত্মগোপন
কেঊ মনে রাখেনা,
প্রতিটি বেকার মানুষ
এক সময় পাগল কবি হয়ে যায়,
কবিরা কখনো জানতে পারেনা
তারা সুখে আছে না দুখে,
তাই তোমাকে আর আমার জবাব দেওয়া হলোনা।


মনোলীনা,
পাগল কবিরা চিঠি লিখতে পারেনা
শুধু না দেখা বিরহ আর অভিমানের
পিছনে ছুটতে ছুটতে জীবনের মানে খুঁজে।
--------------------------------
জি, এম, হারুন অর রশিদ
০৫/০৫/২০১৭