বিয়ের পুরো অনুষ্ঠানটি একেবারে নিখুঁত হচ্ছে।
ভিডিও ক্যামেরার ফ্লাশ লাইটের আলোতে কনের গলায় বর যখন  ফুলের মালা পরিয়ে দিলো-
তখনই বরের চেহারায় একটি রাষ্ট্র বিজয়ের
হাসি ঝলক দিয়ে উঠলো।
আর কনে যখন কাঁপা কাঁপা হাতে বরের গলায় মালা দিচ্ছিলো-
তখন সে ছলচাতুরি করে বারবার সরে যাবার চেষ্টা করছিলো।
এতো সহজে দখল দিবেনা সে।


চারিদিক থেকে হাততালির শব্দে অনেক দূর থেকেও বুঝা গেল যে,
কনে শেষ পর্যন্ত বরের গলায় মালা পরিয়েছে।


গলায় মালা পরানো আর গলায় ধারালো ছুরি চালানো একই অর্থ হলো তখন ‌সেই বিয়ের  অনুষ্ঠানেই।
একই হল রুমে দুটি দৃশ্য ঘটলো একটি ক্যামেরার সামনে আরেকটি পিছনে।
বর বিজয়ের হাসি হাসলো-
আর আমি আলোর পিছনে দাড়িয়ে নিজের গলা চেপে ধরলাম রক্ত থামাতে।


মরে যাবার আগে শেষ বারের মতো আমার মনে হলো একবার বলা উচিত ছিলো
- চলো ভালোবাসি।
অনেক দেরি করে ফেলেছি- তাই না!!


তবুও ফ্লাশ লাইটের বারবার ঝলকানিতে বরের হাসি মুখ দেখে বুঝতে পাড়লাম- প্রেমিক ও বরের ধর্মের পার্থক্য।
দু’জনই পুরুষ মানুষ।
তবে অনেক প্রেমিক আমার মতো একদিনই ন-পুরুষ হয়ে যায় তারই প্রেমিকার বিয়ের নিখুঁত অনুষ্ঠানে।


আমার মতো ন-পুরুষরা শুধু আলোর পিছনে সারা সময় দাড়িয়ে থাকে-
একটি কালো চশমা পরে,
কনের বিদায়ের দৃশ্য দেখার জন্য।


যদিও আমি দেরি করে ফেলেছি  যে কোন আবদার করার জন্য-
তবুও শেষ বারের মতো তোমার কাছে রিকোয়েস্ট-
বিয়ের এই নিখুঁত অনুষ্ঠানে তুমি একবারও  কাঁদবেনা কিন্তু।


হে খোদা,
আজ আমার চোখের কালো চশমাটি যেনো ভেঙে না যায়।
তাহলে বিয়ের এই নিখুঁত ‌অনুষ্ঠানটি  চোখের জল আর গলার রক্তে মাখামাখি হয়ে যাবে।
অযথাই কনের নামে কলঙ্ক হবে তখন।


হে খোদা,
দয়া করুন।
——————
রশিদ হারুন
১৪/০১/২০২০