ইদানিং আমার হয়েছে বড়ই বিপদ-
আয়নায় তাকালেই কোত্থেকে এক পুরুষ
এসে হাজির হয় সেখানে।


শক্ত সামর্থ্য অথচ বিপন্ন ভাব তার চেহারায়।
স্হির চোখে আমার দিকে তাকায়,
তারপর-
তারপর, লক্ষ কোটি মূহুর্ত পেরিয়ে যায়
তবুও চোখের পলক পড়েনা তার।
এক সময় আমিই ভয়ে কেঁপে উঠি সেই বিপন্ন দৃষ্টিতে।


ব্যস্ততার ভান করে সরে যেতে চাইলেই
আয়নার পুরুষটি প্রতিবারই বিদ্রুপ কন্ঠে বলে উঠে,
“আমাকে পালতে না পারলে কাউকে দত্তক দিয়ে দাও।
খুঁজলে কোনো নারী পাবে যে শখ করে
পুরুষ পালতে চায়,
কুকুর বিড়াল যে ভাবে পালে ঠিক সেই ভাবে পাললেও চলবে”।


প্রতিদিন একই বিপদ,
একই অভিযোগ।
অবশেষে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলাম-
“একটি শক্ত- সামর্থ্য অথচ অসহায আর বিপন্ন পুরুষকে পালক দেওয়া হবে।
যদি কোন সৌখিন নারী ইচ্ছুক হোন দয়া করে যোগাযোগ করুন-
যোগ্যতা-
বয়স -দেখে ঠিক বুঝা যাচ্ছে না,
পয়ত্রিশ থেকে চল্লিশ অথবা কম বেশীও হতে পারে।।
উচ্চতা – কখনো মাপা হয়নি তবে পাঁচ ফিট এগারোর উপড়ে হবে আন্দাজ।
শিক্ষাগত যোগ্যতা- শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারে।
চরিত্র- শান্ত-শিষ্ট, তবে একদম একশত ভাগ পুরুষ চরিত্র।
কুকুর বিড়ালের মত রাখলেও আপত্তি নেই,
এমনকি গলায় দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখলেও আপত্তি নেই।
তবে একটাই শর্ত-যতোবার ক্ষিধে পাবে ততোবারই খেতে দিতে হবে”।


পরদিন খুব সকালে অসংখ্যবার কলিংবেল বাজতেই দরজা খুলে খুবই আশ্চর্য হয়ে দেখলাম-


একজন নারী অস্হির হয়ে দাড়িয়ে আছেন,
বললেন,
“সকাল সকালই চলে আসলাম,
অন্য কেউ যদি আবার চলে আসে!!
আমাকেই দিতে হবে পুরুষটিকে,
আমার অনেকদিনের শখ একটি শক্ত সামর্থ্য পুরুষ পালক নিবো”।


আর আমি ভাবছি
- শধু শুধু এতোদিন ধরে
আমি একটি বিপন্ন পুরুষকে পালছি।
———————————
রশিদ হারুন
০২/০১/২০২০