একজন বালকের মরণ হয়েছিল হঠাৎ করেই একটি জানালার পর্দায়।
একজন বালিকা যখন কাচের জানালায় কাপড়ের পর্দা টেনে দিচ্ছিল,
-ঠিক তখনই জানালার উল্টোদিকের ল্যাম্পপোস্টের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোরটির মৃত্যু হলো।

দুপুর বিকেল গড়িয়ে রাতের বেলাও যখন বালকটি ফিরল না,
মহল্লার সবাই তাকে খুঁজতে এসে দেখে
সেই জানালার কাচেই তার উৎসুক প্রতিবিম্ব ঝুলে আছে তখনও,
-যদি কাপড়ের পর্দা একটু নড়ে,
আর বালিকাকে যদি একবার দেখা যায়।


অথচ বালকটি কোথাও নেই!
যেনো দিব্যি বাতাসে মিলিয়ে গেছে।
ল্যাম্পপোস্টের নিচে তখনো মাটিতে পড়েছিল আনাড়ি হাতে মাত্র আগুন ধরানো সিগারেট এর আধাপোড়া টুকরা-
সেখান থেকে কিছুক্ষণ পরপর কিছুটা ‌অস্পষ্ট ধোঁয়া বাতাসে উড়ছিল।
একটি বিমর্ষ হাসি আহত অবস্হায় মাটিতে দাপড়াচ্ছিল টেঁটাবিদ্ধ মাছের মতো।
একটি তাজা জীবন্ত প্রেমের চিঠি তখনও বড়ো বড়ো নিঃশ্বাস নিচ্ছিল ধুলোবালিতে শুয়ে শুয়ে।


বালকটিকে খুঁজে না পেয়ে মহল্লার সবাই একসময় মনগড়া গল্পের জন্ম দিতে দিতে যার যার বাড়ি ফিরে গেল মন খারাপ করে।


গভীর রাতে একজোড়া গৃহত্যাগী কাক ল্যাম্পপোস্টের তাঁরের উপর বসে আশ্চর্য হয়ে দেখল
-ল্যাম্পপোস্ট থেকে জানালা বরাবর আশাহত একটি ছায়া তখনও বুক ফাটিয়ে চিৎকার করে মৃত কিশোরটির বেঁচে উঠার অপেক্ষায় কাঁদছিলো।
——————————————
রশিদ হারুন
২৫/০৭/২০২০