মনোলীনা,
একটি বেওয়ারিশ চুম্বন আমার বুকে খুঁটি গেড়েছে।
আমি আমার সব সর্বনাশের ফরমানের পতাকা পত-পত করে উড়তে দেখি সেই চুম্বনে।
চুম্বনটি আমাকে ছেলেধরার মতো গোপনে ফুসলায়-
‘বুক থেকে বের করে একবার যেনো তোমার ঠোঁটে তাকে বিছানা পেতে ঘুমোতে দেই’।
আমি টের পাই-
বিষাক্ত লাল পিঁপড়ের সাথে জোনাকির নকল আলো মিশিয়ে সেঁজেছে এই চুম্বন ।
এই চুম্বন আমি কিভাবে তোমাকেই দেই-
তোমার ঠোঁটের শয্যায় আমার ঠোঁট পেতে!!

মনেলীনা,
একদিন আমি বুকের ভিতরই খুন হয়ে যাবো-
মধ্যরাতে অসভ্য এক এই বেওয়ারিশ চুম্বনে।
এই চুম্বনের হাত থেকে আমি পালাবো কোথায়!!!


মধ্যরাতে গোপনে ঘরের দরজা
খুলে উদ্ভ্রান্তের মত দৌড়াই।  
অস্হির হাইওয়ে ধরে ছুটি কিছুক্ষণ।
পিছনে সাদা পোষাকে অনুসরন করে সেই মায়াহীন বিষাক্ত চুম্বন।
হঠাৎ চলন্ত বাসে লাফিয়ে উঠেও,
দেখি-
আমার আগেই বসে আছে সে সেখানে!!
অন্ধ ল্যাম্পপোষ্টের নিচে লুকিয়েও দেখেছি-
জোনাকির নকল আলোর সার্চ লাইটে সে খুঁজে বের করে ফেলে।
মধ্য রাতেই হাইকোর্টের বারান্দায়
ইয়োর ওনার ওনার বলে চিৎকার করি বাঁচতে চেয়েছি-
তখনও আমার দু’বাহু চেপে ধরে রাতের পংক্ষীরাজ রিকশায় উঠিয়ে নেয়।
প্রেস ক্লাবের রাস্তায় গভীর রাতে অনশনরত সা্ংবাদিকদের দেখে চিৎকার করে যতবারই বলে উঠি-
“ আমার খবরটা দয়া করে একটু পত্রিকায় ছাপাবেন”।
তবুও কখনো আমার খবর পত্রিকায় আসেনা।


মনোলীনা,
ভোর রাতেই বাসায় ফিরে
চিনি ছাড়া চা দু’কাপ বানিয়ে একসাথে বসে পড়ি সেই বেওয়ারিশ চুম্বনের সাথে।
চোখের জলের মতো স্বাদ নিয়ে চিনি ছাড়া চা চলে দু’জনেরই ।
চা শেষ করে দু’জনেই হেসে উঠি বিষন্ন মনে।


মনেলীনা,
তুমি ঘুম থেকে জাগার আগেই
সারা শরীরে সুগন্ধি সাবান মেখে গোছল করি অনেক সময় ধরে।
বুক আর ঠোঁট ঘসে ঘসে
বেওয়ারিশ সেই চুম্বনের লাল পিপড়ে আর জোনাকির নকল আলো ধুয়ে পানিতে মিশিয়ে দেই।
তারপর প্রতি ভোর বেলায়ই বিশুদ্ধ চুম্বন নিয়ে তোমার দরজায় দাড়াই।


মনোলীনা,
তোমার জন্যই
শুধু তোমারই জন্য
আমি পৃথিবীর আস্ত জল নষ্ট করেছি,
প্রতিরাতে বেওয়ারিশ চুম্বনের সব বিষ জলে ধুয়ে ধুয়ে।
———————————
রশিদ হারুন
০৩/১২/২০১৯