আমার জন্মের পরেই একটি ‌অন্ধকার কফিন জন্মেছিলো আমার অপেক্ষায়,
শুধু আমারই অপেক্ষায়।


কেউ জানেনা একমাত্র আমিই জানি,
শহরের এই ‌অবেলায়
বড্ড এই অবেলায়
মরনের ভয়ে কবে থেকেই লুকিয়ে আছি আমি সেই দরজা জানালাহীন কফিনে।
বুকের ভিতরে না দেখা এক মরনের ভয়ে বুক অন্ধকার করে বেঁচে থাকি কোনমতে।


কেউ বুঝেনা
আমি সেই অন্ধ কফিনের ভিতরে একটু স্বাধীন বাতাসের জন্য হাসফাস করে মরছি প্রতি মুহূর্তে।


আকাশের খোঁজে যে পাখি প্রতিদিন উড়ে যায়
আমার কফিনের উপড় ছায়া পড়ে তার।
সেই ছায়া প্রতিদিন চিৎকার করে আমাকে ডেকে বলে,
এভাবে মানুষ বাঁচে!
অন্তত একদিন আলোতে বেঁচে থাকো
প্রতিদিন এভাবে মরে যাবার বদলে
অন্তত একদিনই বাঁচো।


তাইতো সূর্যের তীব্র আলোতে ‌অন্তত একদিন বাঁচার আশায়
সেই কফিন থেকে নিজেকেই নিজে টেনে হিচড়ে শহরের ব্যস্ত রাজপথে দাঁড় করিয়ে দেই মেরুদন্ড সটান করে।
তারপর সেই কফিনের উপড়েই দাঁড়িয়ে পড়ি
বুকের সমস্ত না দেখা ভয় শহরের রাজপথের তপ্ত পিচে ঢেলে দেই সাহস করে।
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম সেই বিপ্লবীর মতো করে আকাশ বাতাস কাপিয়ে বলি
‘প্রতিবাদ’।


ভয়হীন বেঁচে থাকার অধিকারের জন্য প্রতিবাদ
ক্ষুধাহীন বেঁচে থাকার অধিকারের
জন্য প্রতিবাদ
সত্য কথা বলার অধিকারের জন্য প্রতিবাদ
স্বপ্ন দেখার অধিকারের জন্য প্রতিবাদ
একটি শিকলমুক্ত কবিতার অধিকারের জন্য প্রতিবাদ।


তারপর,
তারপর সেই কফিনটি শহরের ব্যস্ত রাজপথে ফেলে দিয়ে
নির্ভিক ভাবে নিজেকে নিয়েই হেটে বাড়ি ফিরি আমার প্রিয় কবিতার খাতার কাছে।


শুধু শহরের সবাই দেখে একটি কফিন ব্যস্ত রাজপথে শুয়ে আছে
আর তার গায়ে লাল রঙের জ্বলজ্বলে কালিতে বড় বড় করে লেখা,
-কফিনটির ভিতরে যে মানুষটি আটকে ছিলো এতোদিন
সে এখন কবি
সে এখনো বেঁচে আছে।
——————————————
র শি দ  হা রু ন
২৬/১০/২০২০