“আজ আসি,
ভালো থাকবে,
আবার দেখা হবে”,
এ কথা শুনলেই আমার ভয় হয়,
মনোলীনা,
আমার ভয় হয়
আর বোধ হয় দেখা হবে না,
আমার আর ভালো থাকা হবে না।


বালক বেলায় স্কুল বন্ধু তপন যখন
তার বাবার চাকুরীর সুবাদে অন্য শহরে চলে গেলো,
বিদায় নেওয়ার সময় ভিঁজে চোখে বলেছিলো-
“আসিরে ,ভালো থাকিস,
আবার দেখা হবে”,
আর কখনোই তপনের সাথে দেখা হয়নি,
আমি অনেকদিন রাতে গোঁপনে তপনের জন্য কেঁদেছি,
তপন কেমন ছিলো আমি জানতাম না
তারপর থেকে আমি অনেকদিন ভালো ছিলাম না।


কিশোর বয়সে আমি ছিলাম পাশের বাসার
নীলা’দির ভালোবাসার ডাকপিয়ন,
প্রায় প্রতিদিনই লুকিয়ে চিঠি দিয়ে আসতাম
পাশের গলির অসীম’দার কাছে,
আবার উওর নিয়ে আসতাম,
প্রায়ই লুকিয়ে চিঠি পড়ে ফেলতাম,
কি রকম অদ্ভুত কথা লিখা থাকতো চিঠিতে বুঝতাম না,
তবে শরীরে, মনে খুবই অস্হির হয়ে যেতো চিঠি পড়ার পর,
সেই নিলা’দি একদিন অসীম’দার বদলে
বড়লোক পাত্রের সাথে বিয়ে করে বিদেশ চলে গেলো,
যাবার আগে আমাকে ডেকে বললো.
“আসিরে ,ভালো থাকিস,
আবার দেখা হবে”,
নিলা’দির সাথে আর কখনোই দেখা হয়নি আমার,
আমার ভালো থাকা হয়নি অনেকদিন,
আমার মন খারাপ থাকতো শুধু তখন ,
বুঝতাম না কার জন্য আমার মন খারাপ.
নিলা’দি , অসীম’দা নাকি আর চিঠি পড়তে না পারার জন্য ।


তারপর অনেক দিন পর
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানের বন্ধু শাহেদ যখন ডিভি লটারী পেয়ে
তার স্বপ্নের দেশ আমেরিকা চলে গেলো,
যাবার আগে শুধু বলেছিলো,
“আসিরে ,ভালো থাকিস,
আবার দেখা হবে”,
আর কখনো দেখা হয়নি শাহেদের সাথে,
শাহেদকে আমি প্রায়ই স্বপ্নে দেখতাম তখন,
আমি অনেকদিন ভালো ছিলাম না শাহেদের জন্য।


মনোলীনা,
আমি তোমাকে আমার ভালোবাসার দিব্যি দিচ্ছি,
তুমি কখোনি আমাকে বলোনা,
“আজ আসি,
ভালো থাকবে,
আবার দেখা হবে”,।


মনোলীনা,
প্রিয় মানুষদের কাছ থেকে মানুষ কেনো যে চলে যায় !
এভাবে কেউ যেনো না যায়,
কেউ ভালো থাকেনা
সবারই মন খারাপ থাকে অনেকদিন।
-----------------
রশিদ হারুন
২৯/০৩/২০১৮