আমার কাঁধে এক অদৃশ্য বিষাদের ব্যাগ ঝুলছে কিছুদিন যাবত,
ব্যাগটি প্রচণ্ড ভারী হতে থাকে রাতের  সাথে পাল্লা দিয়ে।
সেই সময়ে পৃথিবীর সব নিঃসঙ্গ জোনাকিরা লুকিয়ে থাকে আমার ব্যাগে,
আর আমি আস্তে আস্তে জোনাকিদের নিঃসঙ্গতার ভারে কুঁজো হতে হতে মাটিতে মিশে যেতে থাকি।


দিনের আলোতে মহল্লার চায়ের দোকানে বসে
তোমার তেতলা বাড়ির বারান্দার দিকে তাকিয়ে আমি টের পাই
আমার পৃথিবীর একমাত্র সত্য


বারান্দায় রোদে শুকাতে দেওয়া
তোমার হলুদ ওড়নাটাই একলাই আমাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে এই পৃথিবীতে,
আর বাকি সব মিথ্যে;
ঠিক তখনই সেই সব নিঃসঙ্গ জোনাকি আবার ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকে।


তোমার হলুদ ওড়নটার সান্ত্বনায় আমি ক্রমশ সোজা হয়ে দাঁড়াতে থাকি।
একাকী রাতের পর প্রতিবার এভাবে কুঁজো থেকে সোঁজা হয়ে দাঁড়াতে দাঁড়াতে
আমার মেরুদণ্ড দিনদিন বাঁকা হয়ে যাচ্ছে বিষাক্ত বিষাদের ভারে।


মনোলীনা,
তোমার একটি হলুদ ওড়না আমাকে আর কতদিন সান্ত্বনা দেবে?
তোমাকে অনেকদিন যাবত দেখতে পাইনা বলে
সেই চায়ের দোকানদার আমাকে করুণা করে আর চায়ের পয়সা নেয়না,
চায়ের দোকানের আশেপাশে শুয়ে থাকা ক্ষুধার্ত কুকুরগুলোও আজকাল আমাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে,
তারা একবারও আমার কাছ থেকে আর খাবার চায়না!


মনোলীনা
একুশদিন হলো তুমি তোমার তেতলার বারান্দায় একবারের জন্যও দাঁড়াওনি,
তাইতো বাংলা অভিধানে শুধু মাত্র বিষণ্ণতা শব্দের অর্থ বদলে গেছে,


শহরের সব কবি আর ডাক্তারগণ বিষণ্ণতা শব্দের বদলে এখন লিখেন ‘রশিদ হারুন’।
---------
র শি দ  হা রু ন
১৯/০৪/২০২১