মনোলীনা,
জানো, আজকাল বৃষ্টি শুরু হলেই
আমি ঘুমের ভান করে থাকি,
যেনো প্রচন্ড অনীহা আমার বৃষ্টির জলে,
অথচ, তুমি আমাকে  ডাকবেই প্রতিটি ফোঁটায়,
আমি পারিনা বেশীক্ষণ উপেক্ষা করে থাকতে, তোমাকে, তোমার ডাক’কে,
তারপর, ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাড়াই
খালি রিকশা দেখে উঠে বসি ডান দিক’টা খালি রেখে,
তোমার জন্যই খালি রাখি ডান দিকটা।


রিকশার হুড তোমার কখনোই ভালো লাগতো না,
তাই আমি ভিঁজতে ভিঁজতে শহরময় ঘুরে বেড়াই,
তবুও হুড তুলে দেই না,
রিকশাওয়লা আমাকে পাগল ভাবে,
ডান হাত’টা সিটের উপর চেপে ধরি,
কখন যে তোমার বদলে আমার বিষাদ
বসে থাকে সেখানে, টেরও পাইনা,
ছুয়ে থাকি আমার বিষাদ’কে অনন্তকাল,
তারপর একসময় মরে যেতে ইচ্ছে করে,
মরে গিয়ে বৃষ্টির জল হতে ইচ্ছে জাগে।


প্রতিবারই রিকশা’টা কি ভাবে যেনো
সেই কফি’র দোকানটার সামনে এসে দাড়ায়,
আমি জানি না,
বিশ্বাস করো আমি জানি না,
প্রচন্ড বৃষ্টির দিনে  তুমি শেষবার এই কফির দোকানেই আমাকে  
“ভালো থেকো” বলে বিষাদ দিয়েছিলে।


আমি ভিঁজে শরীর নিয়ে দু’কাপ গরম কফির
অর্ডার দেই প্রতিবার,
একটা কাপ তোমার জন্য রেখে দেই,
বিল দিয়ে চলে আসার সময়
প্রতিবারই ওয়েটার ডেকে বলে,
“আপনার এক কাপ কফি এখনো রয়ে গেছে”
আমি মনে মনে বলি,
“ওটা কফি না আমার বিষাদ,”
তারপর বৃষ্টিতে হাটতে হাটতে আবার ঘরে ফিরি।


মনোলীনা,
তুমি এই শহরের যেখানেই থাকো,
বৃষ্টির দিনে ভুলেও সেই কফির দোকানে যেওনা,
তুমিতো জানো না,
কখোনো জানবেও না,
বৃষ্টির দিনে এক কাপ ‘গরম বিষাদ’
তোমার অপেক্ষায় সেখানে বসে থাকে
সেই কফির দোকানে।
————
রশিদ হারুন
১১/০৫/২০১৯