দেখা হলো-
শেষমেশ দেখা হলো।


চলতি পথে ‌অস্হির চোখ দুটি কতো মেরেছি ছুড়ে,
রিকশা, গাড়ি, বাসে অথবা অসংখ্য মানুষের ভীড়ে।
শেষমেশ তোকে দেখতে পেলাম  মোবাইলের স্ক্রীনে,
উনিশশ তেইশ দিন ষোল ঘন্টা পার হওয়ার দিনে।


নাম পাল্টে তুই ফেসবুকে এতোকাল,
নেই কোনো কমন ফ্রেন্ড,
আমি তোর নাম দিয়ে খুঁজে অযথাই নাকাল।
ভাগ্যিস তোর প্রোফাইল ওপেন-
পাবলিক করা ছিলো,
হঠাৎ করেই এ্যাড ফ্রেন্ডে
তাই আমার চোখ আটকে গেলো।


হলুদ শাড়ি, নীল টিপ
সেই একই হাসিতে,
এখনো কি একাই হাসিস-
তোর আয়নায় তোরই বরের বাড়ীতে?


চোখের নিচে কৃপণের মতো জমিয়ে রাখতি-
যে সব বাড়তি মায়া,
সবই বোধহয় বিলেয়েছিস তোর বরকে?
মনে হলো ভুল দেখলাম নাতো  আজকে?
তোর চোখের নিচে শুধু পড়ে আছে-
আমার না পাওয়া হাহাকারের কিছু ছায়া।


ঠোঁট দুটি তোর একটু যেনো ভারী হয়েছে?
এখন বুঝি চাওয়াগুলো বেশি কষ্টে পড়েছে?
এখনো কি অল্পতেই ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদিস?
বরের কাছে কি যখন তখন ঠোঁটে আদর খুঁজিস?


বরের বুকে মুখ ঘসতে একবারও কি থমকে যাস?
থামিস নাকি!!
সেখানে কি আমার ঘামের মরণগন্ধ পাস।


চুলগুলো কেমন স্বাধীনভাবে উড়তে দিয়েছিস!!
আমার কাছে আসলেই অযথাই বেঁধে রাখতিস!!
আমার মতো তোর বরও কি
চুলে ডুবতে চায়,
নাকি চুল পর্যন্ত যাওয়ার আগে ঠোঁটেই মরে যায়?


রাগ উঠলে এখনো কি জোরে খাঁমচে দিস?
আমার মুখ,বুক আর পিঠের দাগের কথা মনে কি রেখেছিস?
রাগ কমাতে বর কি
তোকে আচমকা বুকে টেনে ধরে?
নাকি পাল্টা রাগে সেও আরো দূরে সরে পড়ে।


প্রোফাইলের সব ছবিতে তোকে আগের চেয়ে ভারী লেগেছে,
শরীরে বোধহয় ভালোবাসার  আলগা মাংস বিঁধেছে।
আগেতো খাবার দেখলেই চেহারায় দেখতাম ভয়,
এখন বোধহয় বরের আদরে
সবই খেতে হয়।


এখনো কি জোছনা রাতের সেই পাগলামিটা পালিস?
ঘরে সব বাতি নিভিয়ে দিস!!
কাপড়হীন হয়ে এখনো চাঁদকে লোভী করিস?


এখনো কি চায়ে চলে দু’চামচ চিনি?
নাকি বরের কথায় তাও ছেড়েছিস, না জানি!!


ভয়ের স্বপ্নটা এখনো কি মধ্যরাতে জ্বালায় তোকে?
ভয় কমাতে বর কি তখন ঝাপটে ধরে বুকে?


উনিশশ তেইশ দিন ষোল ঘন্টা
সয়ে,
ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দিলাম না তাই দোষলাগা রাশির ভয়ে।
যদি আবার ব্লক মারিস,
এক জীবনে তুই একলাই,
শুধু তুই একলাই-
আমায় কষ্ট দিতে পারিস।
নাইতো আমার এতো মনের জোর,
এখন আমার শরীরে ধরেছে নিষিদ্ধ জ্বরের ঘোর।


সব ছবিতে একা কেনো!!
বরের ছবি কই?
ভালো আছিসতো তুই?
ঝগড়া হলে মিটিয়ে নিস যেনো,
আমি ভালো না থাকলেও,
‘লক্ষী সোনা’ ভালো থাকিস তুই।
————————————
রশিদ হারুন
২০/১২/২০১৯
অনুপ্রেরণা এবং কৃতজ্ঞতায় প্রিয় একটি কবিতা- প্রিয় কবি “সৃজা ঘোষের- বছর চারেক পর”