দুর্গা মা আসে, মহালয়ায় শরতের ভোরে শিশির ভেজা পায়ে
বস্তির দুর্গারা রৌদে পোড়া গরম পিচ ঢালা পথে –
দু’মুঠো খাবারের আশায়, দ্বারে দ্বারে ঘুরে,
অনাহারে-অর্ধাহারে ফুটপাতে কাটে তাদের দিন ।


দুর্গা মায়ের অকালবোধন, বেল তলায় চলে কত আয়োজন
বস্তির দুর্গারা দূর থেকে নীরবে ফেলে চোখের জল
মনে নেই আনন্দ, আছে শুধু অভাব আর অনটন ।


দুর্গা মায়ের আগমনী সুরে, মন্ডপে, মন্ডপে চলে হাঁসির বন্যা
বস্তির দুর্গারা ক্ষুধার জ্বলায়, আর্তনাদে দু’চোখে ঝরে কান্না,
নেই নতুন বাহারি পোশাক, জোটেনা দু'মুঠো খাবার,
আছে, শুধুই অভাগিনী মায়ে’র সান্ত্বনা ।


প্রতিবছর  মা আসে, বেড়াতে বাবার বাড়িতে
বস্তির দুর্গারা থাকে, মায়ের হাতে সাজানো কুঁড়ে ঘরে -
আশায় থাকে, বাবার পরিচযের সন্ধানে ।
দুর্গা মা রোজ সেজে গুঁজে কাপড় পরে,
বস্তির দুর্গাদের কপালে জোটে-
ছেঁড়া কাপড় আর দান করা ধনীর ফেকাসে পোষাক।


দুর্গা মায়ের অঞ্জলিতে বাহারি রকম ফুল
বস্তির দুর্গারা ফুটপাতে শুয়ে, অঞ্জলির স্বপ্ন দেখাই ভুল।
ঘৃণার দৃষ্টিতে ভদ্র লোকেরা করে অবহেলা ।  


অপমান, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা সহ্য করেই বস্তির দুর্গাদের পথচলা
তাদের বুকে জমানো, দুঃখের কথা হয়না বলা ।
দশভুজা দুর্গা মা, আবির্ভূত হন অস্ত্র হাতে মহামায়া রূপে
বস্তির দুর্গারা অসহায় হয়ে, নির্বাক, নিশ্চুপ থাকে ।


মা দুর্গা চামুণ্ডা রূপে অসুরের মাথা কাটে
বস্তির দুর্গারা মানব বেশি অসুরদের হাতে, নির্যাতনে মরে।
কবে হবে, অসুর বিনাশিনী দুর্গা মায়ের করুণা ?
দূর হবে কবে ? বস্তির দুর্গাদের হৃদয়ে জমানো যন্ত্রণা ।


রচনাকাল :১০/১০/২০২১