আমি যখন এসেছিলাম, ধরণীর বুকে
তখন, আনন্দেতে হেসেছিলে তুমি,
মাতৃগর্ভ থেকে বেড়িয়ে, অপরিচিত ধরণীকে -
চিনতে না পেরে, কেঁদেছিলাম আমি,
কত আদর-সোহাগ আর ভালোবাসার পরশে
জড়িয়ে নিয়েছিলে, স্নেহের বাঁধনে ।


তোমার একবিন্দু পবিত্র রক্তবিন্দুর মিলনে
মাতৃগর্ভে তিল তিল করে, আমার বেড়ে ওঠা,
আমার রক্তের প্রতিটা কোষে -
আঁকা রয়েছে, তোমার অস্তিত্বের পদচিহ্ন ।


তোমার শাসনে বেড়ি আর ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে
সময়ের সাথে, তোমার দেখানো পথ ধরে -
কঠিন বাস্তবমুখি, অজনা পৃথিবীকে নিয়েছিলাম চিনে ।


সময়ের চক্রে শৈশব-কৈশোর দিয়েছি পাড়ি
তোমার শাসনের গণ্ডি পেরিয়ে -
সময়ের চক্র পূর্ণ করে আজ,
যৌবনে দিয়েছি পা ।


মমত্বহীন পৃথিবীর বুকে
একা একা চলতে চলতে.......!
তোমার দেখানো পৃথিবী পাল্টে গেছে আজ,
নির্মম, নিষ্ঠুর, মমত্বহীন অন্য এক পৃথিবীতে -
অসহায়ের বেসে করছি বসবাস ।


সময়ের নিষ্ঠুরতায়, সকল মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে  -
অজানা পথে পাড়ি দিয়ে আজ,
চলে গেছ তুমি, আমদের গণ্ডি ছেড়ে অনেক দূরে ।  


কোথায় আছো ? কেমন আছো  আজ
সকলের মায়ার বাঁধন ছেড়ে,
জানো বাবা ? হারিয়ে ফেলে আজও তোমায় খুঁজি
খুঁজতে খুঁজতে না পেয়ে তোমায় -
বুকফাটা হাহাকার নিয়ে, চোখের জলেতে ভাসি ।


শুয়েছিলে নিথর, নিস্তব্ধ প্রাণহীন দেহ হয়ে
নিয়েছিল সবাই কাঁধে তুলে, সৎকার করবে বলে,
চিতার আগুনে পুড়ে, একমুঠো ছাই হয়ে-
নদীর জলেতে গেলে ভেসে,
মধুমাখা ভরাট কন্ঠে, কেউ ডাকবে না আজ  আর এসে-
" আয় খোকা, আয় "বলে  ।