নির্ঘুম রাত, ভাবি বসে একা !
ফেলে আসা সেই, দুরন্ত ছেলেবেলার কথা ।
ছিল কত সুখ, কত আনন্দেতে ভরা,
ছিল কত সঙ্গী-সাথী, খেলতাম কত রকম খেলা ।


চোখের কোনে ভাসে আজও
বৈশাখির ঝড়ে, আম কুড়োনোর মেলা,
কতই না ছিল মধুর, সেই ছেলেবেলা ।


" মামার বাড়ি বড় মজা, কিল–চড় নাই "
আমার ছেলবেলাতেও ছিল, ঠিক তাই !


মনে মনে দিন গুনতাম.....
কোন রকম অনুষ্ঠান হলেই,
মামার বাড়ি ছুটতাম ।


আশ্বিনে দুর্গোৎসব, চৈত্রসংক্রান্তিতে ছাতু -
দিপাবলীতে ভাই ফোটা আর পৌষসংক্রান্তিতে পিঠা,
মনে কত আনন্দ হতো,
এইতো সময়, মামার বাড়ি ছুটা ।


দুর্গা পূজোয় ধুপচি হাতে, করতাম আরতি
ঢাক কাঁধে, ভাই/বন্ধু অনুপ হতো সারথি ।
চৈত্রসংক্রান্তির ছাতু আর দীপালী'র ভাই ফোটায়,
ভাইয়ে'রা সব বসতাম সারি করে -
ধন্য হতাম, বোন'দের মমতার ছোঁয়ায় ।


দিদার হাতের পৌষসংক্রান্তির পিঠা-পুলি
আহ্ ! সে স্বাদ কি করে ভুলি,
গায়ে সরষের তেল মেখে -
হিম শিতল জলে দিতাম ডুব,
"মেষ ঘরে" আগুন দিয়ে, শরীর নিতাম সেঁকে ।


কত রকম খেলা খেলে, কাটিয়েছি বেলা
কাঁদা মাটি গায়ে মেখে -
খেলেছি ডাংগুলি, গুল্লাছুট, ফুটবল,
আরও হরেক রকম খেলা ।


গাছে গাছে পাখির ছানা,
দোয়েল, শালিক, টিয়া, ময়না
খুঁজতে খুঁজতে পাখির বাসায়, দিতাম হানা ।
কৈ, শিং আর পুঁটি ধরতে,
বরশী হাতে, ঘুরতাম জলধারা'তে ।


সারাদিন কাজের শেষে, বাবা ফিরলে বাড়ী
মা আমার তুলে ধর'তো, সকল নালিশের হাড়ি,
রেগে গিয়ে বাবা আমায়, দিতো বেতের বাড়ি ।


খেলার সাথী বন্ধুরা সব -
হারিয়ে গেছে কোন সে দূরে,
ব্যস্ততার মাঝে, জানিনা কোথায় তারা আজ,
আছে কোন সে অচিনপুরে ?


হারিয়ে ফেলেছি আজ
ধুলি মাখা সেই, দুরন্ত শৈশব,
স্মৃতির ফ্রেমে বন্দী আছে আজো- "ঐসব" ।