বাংলা আমার, মমতাময়ী "মা"
"মাগো"- তোমার জন্য
৫২-য় দিয়েছি রক্ত,
৭১-ও দিয়েছি রক্ত,
আজও বেঁচে আছি, তোমারই মমতার জন্য ।


আজও তোমার বুকে "মাগো"
মমতার আঁচল জড়িয়ে
গহিন রাত্রির আঁধার ভেঙে -
পূর্ব আকাশের বুক চিঁড়ে,
সোনালি ভোর হয় ।
ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা ভোরের –
মাতাল হাওয়ায় হয় চঞ্চল ।


জোনাকির মিটি মিটি আলো
ঢেউ খেলে, ধুধু অন্ধকারের বুকে
তোমার বুকে আজও "মাগো"
ছয় ঋতুর সৌন্দর্য করে বিচরণ ।


তোমার বুকে আজও
দাবদাহ'ময় খড়া নিয়ে, "ঋতু নায়ক" বেশে
উৎসবের রথে চড়ে, গ্রীষ্ম আসে ।
মৃদু মৃদু হাওয়া হয় মাতাল,
কালবৈশাখী বিছায় তার জাল ।


তোমার বুকে আজও
পূবালী হাওয়ায় উড়ে,
বর্ষার তরি ভিড়ে, প্রকৃতির তীরে ।
বিলের জলে হেসে ওঠে, লাল-সাদা শাপলার মুখ,
কদমের হলুদ বুকে বৃষ্টি ঝড়ে, আষাঢ়ের মেঘে ।


তোমার বুকে আজও
কাশফুলের দোলায় চড়ে, শিউলি মালায় সেজে,
শরৎ আসে বাংলার  ঘরে,
"ঋতুর রাজকন্যা" বেশে ।
নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় চরে,
প্রকৃতির সাম্রাজ্য শরৎ বেড়ায় ঘুরে ।


তোমার বুকে আজও
সোনালী ধানের শীষে, ঢেউ যায় মিশে,
হেমন্ত আসে "ঋতু রানী" বেশে ।
নদ-নদী, খাল-বিলে পানি যায় কমে,
পাড়ার দামাল ছেলেদের, মাছ ধরার উৎসব জমে ।


তোমার বুকে আজও
দোয়েলের শিশির ভেজা ঠোঁটে ভর করে,
শীত আসে, বাংলার ঘরে ।
হিজল, তমাল আর অশথের ডগায়,
শিশির বিন্দু, ভালবাসার চুমু খায় ।


তোমার বুকে আজও
বৈশাখী দমকা হাওয়ার সাথে,
আমের মুকুলে'র খেলা,
কোকিলের মুহুঃ মুহুঃ ডাকে -
"ঋতুরাজ" বসন্তের আভাস জড়িয়ে থাকে ।


ভালোবাসি মাগো তোমার, সবুজ-শ্যামল ছায়া,
তোমার মাটিতে'ই, পাই মাগো পরম স্নেহে'র মায়া ।