যাবে কি, আমার সাথে?
আমাদের সবুজ–শ্যামল ছোট্ট গাঁ'য়,
যেথায়, গ্রামের বুক চিঁড়ে আঁকা-বাঁকা মেঠো পথে,
দু’পাশ সবুজ ঘাসের চাদরে মুড়ানো ।
ছোট ছোট ঘর, ছোট-বড় জঙ্গল  পেরিয়ে
কৃষকের কষ্টে বুনা ফসলের, সবুজ মাঠ ।


গ্রামের ঘুম ভেঙ্গে যায়, পাখির গুঞ্জনে
লাঙল-জোয়াল কাঁধে নব উদ্যমে-
ছুটে চলে কৃষক, হাল জুড়বে বলে ।
কৃষাণিদের গালগপপো, রান্নায় ব্যস্ত সারাদিন
রাতে জ্বলে, জোনাকির মিটি মিটি বাতি ।


ঋতু আসে ঋতু যায়, বদলায় গ্রামের প্রতিচ্ছবি
গ্রীষ্ম আসে, দাবানলের বেশে
পুড়িয়ে দেয় মাঠ,
গ্রামের বুকে বয়ে যাওয়া নদী
"ধলাইয়ের" যৌবন শুকিয়ে হয় খাক।


বর্ষা এলে, ধলাই মিটায় তার জ্বালা
মাঝি তখন নদীর বুকে, ভাসায় সুখের ভেলা,
খালে-বিলে সদ্য ফোটা, শাপলা করে খেলা ।
বৃষ্টির জলে, গা ভিজিয়ে
প্রকৃতি হারায় রুক্ষতা,
ফিরে পায় তার, চির চেনা স্নিগ্ধতা ।


শরৎ কালে গ্রামের আকাশে
সাদা মেঘ করে খেলা,
রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি খেলায়, কেটে যায় বেলা
ধলাই তীরে, জ্যোৎস্না রাতে,
কাশফুলের কোলে, চাঁদ মামা দোলে ।


হিম কুয়াশার চাদর পড়ে
হেমন্ত আসে, আমাদের গাঁ জুড়ে,
চারদিকে ফসল কাটার ধুম
কৃষক-কৃষাণীর হারাম হয় ঘুম ।


জীবনের চাঞ্চল্যকে ম্লান করে
শীত আসে, আমাদের গাঁ জুড়ে,
সকালে সূর্য–কুয়াশার লুকোচুরি খেলা
বসে ছোট-বড় সবার, মিষ্টি রোদ পোহানোর মেলা ।


কোকিলের কণ্ঠে, ভর করে
ঋতুরাজ বসন্ত আসে, আমাদের গাঁ জুড়ে,
চারিদিকে ফুলের, মৌ মৌ গন্ধ বিলিয়ে
দখিনা হাওয়ায়, যায় মিলিয়ে ।


এই গ্রামেতেই জড়িয়ে আছে
আমার ফেলে আসা, দুরন্ত শৈশব
আজও স্মৃতিতে মিশে আছে,
হারানো দিন "ঐসব"!