আমি পথশিশু !
জীবনের সাথে- যুদ্ধ করে বেঁচে আছি কঠিন সংগ্রামে
অনাহারে-অর্ধাহারে, বসে থাকি বিবস্ত্র গায়ে -
রেল লাইনের ধারে কিংবা ফুটপাত ঘেঁষে ।


আমি পথশিশু !
মনের মাঝে নেই আনন্দের রেশ -
দুঃখের জ্বালা সইতে সইতে, চোখের জলখানিও প্রায় নিঃশেষ
কোন ভালবাসার সংস্পর্শ ছাড়াই, অযত্ন-অবহেলায়
বেড়ে উঠি, ভালবাসা মাখা আমার মায়ায় জড়ানো -
ফুটপাত অথবা রেল-স্টেশনে ।


আমি পথশিশু !
বুকেতে হাজারো যন্ত্রণা নিয়ে, চলি জীবনের অলিগলি
কখনো গ্রীষ্মের প্রখর রোদের হাহাকার -
কখনো বর্ষার অঝোর ধারার বৃষ্টি,
কখনো আবার ধুলো-মাটি লুটিয়ে, দেহ করে একাকার ।


আমি পথশিশু !
আমার কোন জন্ম পরিচয় নাই,
কে আমার বাবা, কেইবা আমার গর্ভধারিণী- "মা" ?
জানিনা তো কিছু, পথে পথে হাঁটতে হাঁটতে -
হলাম আমি পথশিশু !
কেউ বলে, টোকাই আবার কেউ গালি দিয়ে বলে, বে-জন্মা ।


আমি পথশিশু !
দেখতে চাইনা আমি পূর্ণিমার চাঁদ কিংবা মধুর কোন স্বপ্ন
শুধু বাঁচার জন্য চাই এক মুঠো ভাত অথবা
বড় লোকের ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট কিছু খাবার ।


আমি পথশিশু !
আমিও মানুষ, আমারও আছে বেঁচে থাকার অধিকার
চাইনা আমি ফুটপাত অথবা রেল-স্টেশনে কাটাতে রাত,
চাইনা হাঁটতে বিবস্ত্র গায়ে, মানুষের গালমন্দ সয়ে,
চাইনা বৃষ্টি ভিজতে, রোদে শুকাতে,
চাই শুধু, পেট ভরে খেতে- দু'মুঠো ভাত,
চাই শুধু, সাধারণ মানুষের মতো বাঁচতে ।